সাতক্ষীরা জেলায় ১৯৯৭ সালের যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন পলাতক আসামি কে ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব–৩।
বুধবার (৫ এপ্রিল) তারিখ ভোর পৌনে ৬টায় গ্রেফতার করে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–৩।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব–৩ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ, পিপিএম (সেবা), বিজিবিএম, পিবিজিএম, পিএসসি।
সুনিদিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব–৩ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হাদাইল উত্তরপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১৯৯৭ সালে সাতক্ষীরা জেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন পলাতক আসামি মোঃ আব্দুল আজিজ সরদার (৪৯)কে।
অধিনায়ক আরো জানান, আজিজ যৌতুক হিসেবে শশুরবাড়ি হতে মোটরসাইকেল এবং বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাবি করত। ভিকটিমের পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় যৌতুক হিসেবে মোটরসাইকেল দেওয়ার জন্য কিছুদিন সময় নেয়। কিন্তু সে সময় না দিয়ে তার স্ত্রী রেহেনা পারভিনকে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করে। ভিকটিমের বাবা যৌতুকের দাবি পুরণ করতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ২০/০৪/১৯৯৭ তারিখ ভিকটিম তার স্বামীর বাড়িতে এসে তার বাবার পক্ষে যৌতুকের টাকা দেওয়া অপারগতা প্রকাশের বিষয়টি ধৃত আজিজকে জানায়।
এতে আজিজ ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িতে থাকা কাঁচাবেল দিয়ে স্ত্রী রেহেনার মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। পিটানোর একপর্যায়ে ভিকটিম রেহেনা মৃত্যুবরণ করে।
ভিকটিম রেহেনার মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার জন্য ধৃত আজিজ কিটনাশক নিয়ে এসে ভিকটিম রেহেনার মুখের মধ্যে ঢেলে দেয়।
ভিকটিম রেহেনার মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচা শওকত আলী সরদার বাদী হয়ে সাতক্ষীরা কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধৃত আজিজসহ ০৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে।
উক্ত মামলার প্রধান আসামি আব্দুল আজিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষনা করেন।
ধৃত আসামি আব্দুল আজিজ মামলার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে ০৬ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পায়।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০২২ সালে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডাদেশ রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার পর থেকে ধৃত আজিজ এলাকা ছেড়ে আশেপাশের এলাকার মসজিদ এবং বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকতে শুরু করে।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন পলাতক আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনু/দীপ্ত সংবাদ