সেহরি, ইফতার, নামাজ ও পবিত্রতার মধ্য দিয়ে পার হয় রমজান মাস। দীর্ঘ একমাস স্বাভাবিক খাবার রুটিন থেকে বিরত থাকবেন সব মুসলিমরা। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই সময় নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং ফিট থাকতে খাবারের প্রতি একটু বাড়তি নজর দেওয়া জরুরি। কিছু স্বাস্থ্যবিধি এ সময় আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করে দিতে পারে। নিয়ম মেনে চললে রোজা রেখে থাকা যাবে স্বাভাবিক কর্মক্ষম ও সতেজ।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রমজানে কর্মক্ষম ও সতেজ থাকতে কী কী খাবার খেতে হবে–
সেহরি ও ইফতারে বেশি করে খেলে ক্ষুধা দেরিতে লাগবে এমন ভুল ধারণাটি বাদ দিতে হবে। ভাত রুটির মতো ভারী খাবারগুলো আমাদের দেহে হজম হতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। পরিমাণ যাই হোক হজমের সময়কাল প্রায় এক। অর্থাৎ পাহাড় প্রমাণ খেলেও নির্দিষ্ট সময় পর আপনার ক্ষুধা লাগবেই।
সেহরির খাদ্য তালিকা:
- সেহরির খাদ্য তালিকায় সুষম খাবার যেন থাকে। যেমন– ফলমূল, শাকসবজি, কম চর্বিযুক্ত মাংস বা মাছ, ভাত বা রুটি, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম ইত্যাদি। সম্পূর্ণ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সেহরির খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন সিদ্ধ ডিম ১টি, কমলা বা কলা ১টি, রুটি ২টি বা ভাত পরিমাণমতো, শাকসবজি এক বা একাধিক প্রকার, লো ফ্যাট মিল্ক ১ গ্লাস।
- খাবার অন্ত্রে শোষণ ও হজম হতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তাই আপনি সেহরিতে যত বেশি খাবেন সেই খাবার শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি টেনে এনে হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করার চেষ্টা করবে।
- দুধ জাতীয় খাবার অন্ত্রে খুব ধীরে ধীরে শোষিত হয়। সেহরিতে দুধ বা টক দই খেলে একটু একটু করে সারাদিন শক্তি পাওয়া যাবে।
- সেহরিতে এড়িয়ে চলা উচিত ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত চিনি, লবণজাতীয় ও চর্বিযুক্ত খাবার, আচার, সল্টেড বিস্কিট মাত্রাতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ ও অতিরিক্ত চা বা কফি খাওয়া উচিত নয়। সেহরিতে অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার খেলে বেশি পিপাসা পায়। সেহরিতে অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যারা ধূমপান করেন, তারা এ মাসে ত্যাগ করতে পারেন।
ইফতারের খাদ্য তালিকা:
- ইফতারের শুরুতে ঘন শরবতের পরিবর্তে পাতলা শরবত খাওয়া উচিত। আবার ইফতারে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য একেবারে অধিক বেশি পানি ও ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করা পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত অল্প অল্প করে পানি খেতে হবে। পানি পানের সঙ্গে মাঝে মধ্যে ইসবগুলের ভূষি খেতে পারেন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে ।
- ইফতারে তেলে ভাজা খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলা উচিত এবং যতটা সম্ভব খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এড়িয়ে চলুন। ডাল জাতীয় প্রোটিন বেশি দ্রুত সতেজ করে তাই ইফতারে হালিম বা ডালের স্যুপ খুবই কার্যকরী। তবে যাদের হজমের সমস্যা আছে ও কিডনি রোগে ভুগছেন তারা এ জাতীয় খাবার কম খাবেন।
- ইফতারে কিছু উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত যেমন খেজুর ও ছোলা। ইফতারিতে মিষ্টি জাতীয় খাবার খুব দ্রুত শরীরে শক্তি জোগায়। খেজুরে থাকা গ্লুকোজ খুব দ্রুত শরীরে শোষিত হয়। অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন জিলাপি খুব কম সময়ের মধ্যে শক্তি দেয়।
ইফতারে যা এড়িয়ে চলতে হবে:
হঠাৎ করে অনেক কিছু খাওয়া সমীচীন নয়। ইফতারের পর চা, কফি ও সোডাজাতীয় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার খাবেন না। এগুলো বুকজ্বালা ও বদহজমের কারণ হতে পারে।
অনু/দীপ্ত সংবাদ