দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এক অভূতপূর্ব উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় পর দলীয় প্রধানকে সরাসরি কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বিএনপি গ্রহণ করেছে স্মরণকালের বৃহত্তম এবং বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি।
দীর্ঘ দেড় দশক পর প্রিয় নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীতে এখন সাজ সাজ রব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সংবর্ধনা স্থল এবং নেতার বাসভবন পর্যন্ত প্রতিটি মোড়ে মোড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল তোরণ, টাঙানো হয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তারেক রহমান। তার সাথে স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও থাকছেন।
তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনপি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথভাবে কাজ করছে। বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ বা সিএসএফ–কে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনর্গঠিত করা হয়েছে। বিমানবন্দর ও সংবর্ধনা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তারেক রহমান সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনায় যোগ দেবেন। বিএনপি নেতাদের দাবি, এই দিন ঢাকামুখী জনস্রোত হবে ইতিহাসের বৃহত্তম এবং প্রায় অর্ধকোটি মানুষের সমাগমের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন।
নেতাকে বরণ করতে সারাদেশের গ্রাম–গঞ্জ ও শহর থেকে নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার বাস ও ট্রাক ভাড়া করার পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঢাকায় পৌঁছাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক রহমানের ফেরা বিএনপির রাজনীতিতে এক নতুন গতির সঞ্চার করবে। দেশে ফিরেই তিনি নির্বাচনী প্রচারণা ও দল গোছানোর কাজে সরাসরি নেতৃত্ব দেবেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তারেক রহমানের প্রথম গন্তব্য হবে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল। সেখানে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসাধীন তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করবেন এবং তার দোয়া নেবেন। এরপর তিনি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় অবস্থান করবেন বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন কেবল এক ব্যক্তির ফেরা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের নবযাত্রার সূচনা। তিনি সকল নেতাকর্মীকে সুশৃঙ্খলভাবে এবং জনদুর্ভোগ কমিয়ে এই আনন্দ উদযাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন।