অমানবিক পুশইনের শিকার বহুল আলোচিত অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে তাঁর এক শিশুসহ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ আইসিপিতে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার রাত ৯টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন– অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুকে পুশইন করায় সৃষ্ট মানবিক ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নজরে আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি সদর দপ্তরের। এরপর কুটনৈতিক পর্যায়ে নিবিড় যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে উভয় দেশের সম্মতিতে ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তাদেরকে সসম্মানে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
এর আগে গত সোমবার সোনালীসহ ৪ ভারতীয় নাগরিককে জামিন দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয়) আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু বলেন– অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন যে কোন সময় বাচ্চা প্রসব করতে পারেন। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তিনিসহ বাকী আরও তিনজনকে জামিন দেয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলা গ্রামের ফারুক হোসেন তাদের জিম্মাদার হয়েছেন। তিনি সোনালী বিবির আত্মীয় হোন।
গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর থেকে সোনালী বিবিসহ ৬ ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন– পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভম জেলার পাকুরের বাসিন্দা ও সোনালী বিবির স্বামী দানিশ শেখ (২৮), তাদের সন্তান সাব্বির শেখ (৮) এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তার দুই সন্তান, মো. কুরবান দেওয়ান (১৬) ও মো. ইমাম দেওয়ান (৬)।
পুলিশ ও বিজিবি জানায়, ওই ছয় ভারতীয় নাগরিককে কুড়িগ্রামের একটি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে বিএসএফ। পরে তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ওই ছয়জনের মধ্যে দুইজন কোলের শিশু হওয়ার মামলায় তাদের আসামী করা হয়নি।
ঘটনাটি ভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং দেশটিতে আলোচনার জন্ম দেয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট গত ২৬ সেপ্টেম্বর ৬ ভারতীয় নাগরিককে ফেরাতে ৪ সপ্তাহের সময় বেধে দেয়।
আলমগীর হোসেন