ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, নেতিবাচক ধারণা কমানো এবং পেশাদার সহায়তা গ্রহণে উৎসাহিত করতে ‘ইয়ুথ মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ারনেস ইভেন্ট’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেড, মশাল মেন্টাল হেলথ এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব) যৌথভাবে এই ইভেন্টের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা তরুণ–সমাজের মানসিক স্বাস্থ্যকে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যাকে উপেক্ষা করলে ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সুস্থ সামাজিক পরিবেশ দুটিই ব্যাহত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন মশাল মেন্টাল হেলথের প্রতিষ্ঠাতা মারিয়া মুমু। মানসিক স্বাস্থ্যকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “মানসিক সুস্থতা ছাড়া ব্যক্তিগত উন্নয়ন অসম্ভব। নিজের আবেগ, চাপ এবং মানসিক দুর্বলতা বোঝা এবং প্রয়োজনে সাহায্য নেওয়া দুর্বলতা নয়; বরং সাহসিকতার পরিচয়।”
তিনি শিক্ষার্থীদের আত্মসম্মানবোধ, আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক চাপে কীভাবে নিজেকে সামলে রাখা যায়—সে বিষয়েও বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুবাইয়াত ফেরদৌস। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে তরুণদের মানসিক সমস্যার ধরন, কারণ, লক্ষণ ও সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়াও তিনি উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, মানসিক চাপ, একাকিত্ব, আত্মহত্যাপ্রবণতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন এবং নিয়মিত কাউন্সেলিং, ঘুম, খাদ্যাভ্যাস ও সহানুভূতিশীল পরিবেশ গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন ও মানসিক প্রশান্তির বিশেষ সেশন উপস্থাপন করেন কণ্ঠশিল্পী এবং মেন্টাল হেলথ মিডিয়েটর নম্রতা বর্মন। তার গান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি করে অনুষ্ঠানে এক উষ্ণ ও মানবিক পরিবেশ যুক্ত করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুসাবের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ মাহফুজ জাকারিয়া, জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের ইভিপি ডা. এনাম, সেক্রেটারি জেনারেল রবিউল ইসলাম, জিএলসি তাহিয়াদুল ইসলাম তামজিদ, ট্রেনিং কমিশনার মাকসুদ হোসাইন, ট্রেজারার শাহাদাত হোসেন সাদী, ডিজিটাল কমিটি চেয়ার ইজেল মোর্তুজা এবং লোকাল ডিরেক্টর আরিফ ও ফারিনা হক।
প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা একাকিত্ব, পারিবারিক চাপ, সম্পর্কজনিত সমস্যা, ক্যারিয়ার দুশ্চিন্তা, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ও ডিপ্রেশন নিয়ে প্রশ্ন করেন। বিশেষজ্ঞরা আন্তরিকভাবে তাদের পরামর্শ ও মানসিক সমর্থন প্রদান করেন।
আয়োজকরা জানান, এ ধরনের কার্যক্রম তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের সুস্থ মানসিক গঠনে সহায়ক হওয়ায় ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও এ আয়োজন আরও বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করা হবে।