প্রায় একযুগ পর আবারও নিলাম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সবশেষ ২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্লেয়ার্স ড্রাফটের মাধ্যমে দল গঠনের প্রক্রিয়া চললেও, এবারের আসরে আবারও ফিরছে নিলাম পদ্ধতি। বুধবার (১২ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
আগামী ২৩ নভেম্বর ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হবে এবারের খেলোয়াড় নিলাম। এর আগে ২০১২ ও ২০১৩ সালের প্রথম দুই আসরেও নিলাম পদ্ধতি ছিল। তবে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকসংক্রান্ত সমস্যার কারণে ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় ড্রাফট পদ্ধতি।
তবে ড্রাফট ব্যবস্থায়ও পেমেন্ট ইস্যু পুরোপুরি সমাধান না হওয়ায় এবার নতুন করে ফিরছে নিলাম প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে এবার নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানার চক্রও শুরু হচ্ছে।
এবার স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিলাম ছয়টি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা, ‘বি’ ৩৫ লাখ, ‘সি’ ২২ লাখ, ‘ডি’ ১৮ লাখ, ‘ই’ ১৪ লাখ এবং ‘এফ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ১১ লাখ টাকা।
প্রতিটি দলকে নিলাম থেকে অন্তত ১১ জন ক্রিকেটার কিনতে হবে। পাশাপাশি তারা সর্বোচ্চ দুইজন খেলোয়াড়কে সরাসরি চুক্তিতে দলে ভেড়াতে পারবে। সব মিলিয়ে প্রতিটি দলের স্কোয়াডে ন্যূনতম ১৩ জন এবং সর্বোচ্চ ১৫ জন স্থানীয় খেলোয়াড় থাকবে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা সরাসরি চুক্তিবদ্ধদের বাইরে প্রযোজ্য হবে।
বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্যও থাকছে পৃথক নিলাম। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে বিদেশি তালিকা, যেখানে ভিত্তিমূল্য ১০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার মার্কিন ডলারের মধ্যে। প্রতিটি দল নিলামের আগে সর্বোচ্চ দুইজন বিদেশিকে সরাসরি দলে নিতে পারবে এবং নিলাম থেকে অন্তত দুইজন বিদেশি খেলোয়াড়কে নিতে হবে। বিদেশিদের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
টুর্নামেন্ট চলাকালে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে খেলোয়াড় বদল করা যাবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমতিসাপেক্ষে। প্রতিটি ম্যাচে দলে থাকতে পারবে সর্বোচ্চ চারজন ও ন্যূনতম দুইজন বিদেশি খেলোয়াড়।
এবারের বিপিএলে অংশ নেবে মোট পাঁচটি দল— পুরোনো দুটি রংপুর রাইডার্স (টগি স্পোর্টস) ও ঢাকা ক্যাপিটালস (চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস), আর নতুন তিনটি হলো চট্টগ্রাম রয়্যালস (ট্রায়াঙ্গল সার্ভিসেস), রাজশাহী ওয়ারিয়র্স (নাবিল গ্রুপ) এবং সিলেট টাইটান্স (ক্রিকেট উইথ সামি)।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু জানিয়েছেন, দল চূড়ান্ত করতে হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে। এই সময়সীমা শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর)।
এবারের বিপিএলে দল নিতে আবেদন করেছিল ১১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বাদ পড়ে যায়, আর বাকি আটটির মধ্য থেকে পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে চূড়ান্ত করেছে বিসিবি।