আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল–৩ (ঘাটাইল) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, কেন্দ্রীয়ভাবে মনোনয়ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার কলেজ মোড় চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
ঘাটাইল আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসিরকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সাবেক মন্ত্রী ও চারবারের সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান খান আজাদের সমর্থকরা প্রতিবাদে নামেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, এস এম ওবায়দুল হক নাসির ঘাটাইলের স্থানীয় নন এবং তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে বাইরে থেকে কাউকে প্রার্থী দেওয়া হলে দলীয় সংগঠনে ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ–সভাপতি ও সাবেক মেয়র মঞ্জুরুল হক মঞ্জু বলেন, “বছরের পর বছর আমরা আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে আছি। আমাদের মতামত না নিয়ে বাইরের কাউকে প্রার্থী দেওয়া হলে তৃণমূল তা মেনে নেবে না।”
একইভাবে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক জানান, “যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, তার বাড়ি ঘাটাইল নয়, সখিপুরে। স্থানীয় মানুষ তাকে চেনেন না। এভাবে প্রার্থী দিলে কর্মীরা হতাশ হবেন।”
পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলা বলেন, “দল বাঁচাতে হলে এলাকার পরীক্ষিত নেতাদেরই মনোনয়ন দিতে হবে। তৃণমূলকে উপেক্ষা করলে নির্বাচনী মাঠ দুর্বল হয়ে পড়বে।”
তবে এ বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘোষিত তালিকাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ের এবং তৃণমূলের মতামত ও যাচাই–বাছাইয়ের পরেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে। বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “সব আসনেই প্রাথমিক তালিকা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের মতামত ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনমত ও তৃণমূলের সংগঠনকে গুরুত্ব না দিলে নির্বাচনী মাঠে বিভাজন তৈরি হতে পারে। তবে তারা এটাও মনে করেন, সময়মতো দলীয় নেতৃত্ব সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে এ ধরনের অসন্তোষ নিরসনে সক্ষম হতে পারে।
এর আগে ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। টাঙ্গাইলের আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়; টাঙ্গাইল–৫ (সদর) আসনটি আপাতত ঘোষণা করা হয়নি।