জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সানায়ে তাকাইচি। চীনবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত ও সামাজিকভাবে রক্ষণশীল এই রাজনীতিবিদ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পার্লামেন্টে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। সম্রাটের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতের পর তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
৬৪ বছর বয়সী তাকাইচি দেশের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর নেতা। গত ৫ বছরে তাকাইচি হচ্ছেন জাপানের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি কোয়ালিশন পার্টনার কোমেইতো দলের আর্থিক কেলেঙ্কারি ইস্যুতে জোট ছাড়লে তাকাইচি নতুন করে ডানপন্থি জাপান ইনোভেশন পার্টির (জেআইপি)-এর সঙ্গে জোট গঠন করেন। সোমবার সন্ধ্যায় দুই দলের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
জেআইপি খাদ্যের ওপর ভ্যাট শূন্যে নামানো, করপোরেট অনুদান বাতিল এবং সংসদ সদস্য সংখ্যা কমানোর পক্ষে। তাকাইচি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করবেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই জাপান গড়ে তুলবেন।
তাকাইচি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ‘নর্ডিক দেশগুলোর’ মতো নারী নেতৃত্বসমৃদ্ধ মন্ত্রিসভা গঠনের। বর্তমানে জাপানের মন্ত্রিসভায় নারী সদস্য মাত্র দুইজন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন মন্ত্রিসভায় সাতসুকি কাতায়ামা অর্থমন্ত্রী ও কিমি ওনোদা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ২০২৫ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী, নারী নেতৃত্বে পিছিয়ে থাকা জাপান ১৪৮ দেশের মধ্যে ১১৮তম অবস্থানে রয়েছে। সংসদের নিম্নকক্ষে নারীর অংশ মাত্র ১৫ শতাংশ।
নারী স্বাস্থ্য ও সামাজিক ইস্যুতে সরব তাকাইচি জানিয়েছেন, তিনি মেনোপজসহ নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে চান। তবে দাম্পত্য পদবি আইন পরিবর্তন ও রাজপরিবারে নারী উত্তরাধিকার প্রথার বিরোধিতা করছেন তিনি।
আগামী সপ্তাহে তাকাইচির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর। ওয়াশিংটন ও টোকিওর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির বিস্তারিত এখনও নির্ধারিত হয়নি। এদিকে ট্রাম্প জাপানের কাছে রুশ জ্বালানি আমদানি বন্ধ ও প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
সূত্র: এএফপি