গত বছরের ৫ আগস্টে হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। হারানো ১২ হাজার ১১৯টি অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি এবং ৩ লাখ ৯০ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র–গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত এক মাসে সেনাবাহিনী ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ১১৯টি হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি অস্ত্র ও ৩ লাখ ৯০ রাউন্ড হারানো গোলাবারুদের মধ্যে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও সেনাবাহিনী বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৭ হাজার ৯২৬ জন এবং গত এক মাসে ১ হাজার ২৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাত, চাঁদাবাজসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী প্রস্তুত উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে শিগগিরই ইসির নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে সেনাবাহিনী সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গেই সেনাবাহিনী সেই দায়িত্ব পালন করবে।
গত ২৯ আগস্ট কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে।
তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বারবার অনুরোধ জানালেও পুনরায় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা সহিংসতা শুরু করে। এতে সেনাবাহিনীর ৫ জন এবং পুলিশের ৬ জন সদস্য গুরুতর আহত হন। একই ঘটনায় সেনাবাহিনীর একটি পিকআপের উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, গত ৩১ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে গভীর রাতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে ভোররাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ওই সংঘর্ষে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং কিছু পুলিশ সদস্য আহত হন।
তিনি জানান, ২ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকরা বকেয়া বেতন ও অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং একজন সদস্যের অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিনিয়ে নেয়। এতে বহু পুলিশ আহত হয় এবং ছয়জন সেনাসদস্য আহত হন, যার মধ্যে একজন বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।