রাজবাড়ীতে আলোচিত নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে গতকাল কয়েক দফায় হামলার পর ওই এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নতুন করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরবারের ভেতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। সেসব থেকে মাঝেমধ্যে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। হামলার খবরে সেখানে ছুটে এসেছে উৎসুক জনতা। ধ্বংসস্তুপ এক নজর দেখতে ভিড় করছে তারা।
এদিকে, নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আজ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দরবার এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ান মোল্লার পাড়ায় অবস্থিত নুরাল পাগলার দরবারের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। দরবারের ভেতরে একটি তিনতলা এবং অপরটি দ্বিতল ভবন। তিনতলা ভবনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন নুরাল পাগলা। প্রতিটি ভবনের সবকটি কক্ষ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। দামি দামি আসবাবপত্র সব খোয়া গেছে। অবশিষ্ট জিনিসপত্র ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভবন থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে অবস্থিত নুরাল পাগলার আস্তানা। টিনশেড ওই ঘরটিতে বসে ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাতেন তিনি। তার মৃত্যুর আগেই টিনশেড ঘরসহ সমতল ভূমি থেকে কয়েক ফুট উচুঁ করে বেদি তৈরি করা হয়। বেদির ওপর একপাশে টিনশেড ঘরে বসে তিনি সময় কাটাতেন, আর মৃত্যুর পর অপরপাশে নুরাল পাগলাকে কবর দেওয়া হয়।
তবে গতকালের হামলার পর দরবারের ভেতরে চারদিক এখন ধ্বংসস্তুপ। ধ্বংসস্তুপ থেকে এখনও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কেউ কেউ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসস্তুপ থেকে চাল, ডালসহ জিনিসপত্র কুড়িয়ে নিচ্ছেন। পুলিশ সদস্যরা মাঝেমধ্যে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দিচ্ছেন, দরবার থেকেও তাদের বের করে দিচ্ছেন।