শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একটি জুয়ার বোর্ডে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চার নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১ আগষ্ট) সকালে উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের দুলারচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, কাচিকাটা ইউনিয়নের মৃত আবুল কাশেম দেওয়ানের ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শফি দেওয়ান(৫৩), মৃত ইদ্রিস আলী দেওয়ানের ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দাদন দেওয়ান (৫০), মৃত সোবাহান মল্লিকের ছেলে ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিতু মল্লিক (৫০), চরভাগা ঢালী কান্দি এলাকার আব্দুর রব সরকারের ছেলে ৭ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি আল আমিন সরকার (৪৮)। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রাজনীতির পাশাপাশি গোপনে জুয়ার বোর্ড পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার কাচিকাটা ইউনিয়নের দুলারচর এলাকার দীর্ঘদিন ধরে জুয়া পরিচালনা করেছিলো একটি চক্র। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোরে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় জুয়া পরিচালনা করার সরঞ্জাম ও নগদ টাকা সহ চার জনকে আটক করে সখিপুর থানা পুলিশ। পরে আটকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার অপরাধে সখিপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
দুলারচর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও মুদি দোকানদার লিয়াকত আলী বলেন, প্রতিদিন রাতে বাজার এলাকায় জুয়ার আসর বসত। লোকজন তাস খেলত, টাকার হিসাব চলত। আমরা অনেকবার বলেছিলাম, কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। ওরা রাজনীতির সাথে জড়িত তাই সবাই ভয় পায়। এখন যাদের ধরা হয়েছে তারা রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিচিত হলেও এলাকার মানুষ জানে—ওরা অনেক দিন ধরেই এসব করছে। আমরা চাই, এই ঘটনার সঠিক বিচার হোক এবং আর যেন এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ না হয়।“
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম দেওয়ান বলেন, এরা দিনের বেলায় রাজনীতির নামে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন আর রাতে জুয়া খেলে সমাজকে নষ্ট করেন। আমরা অনেক আগেই প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম আজকে অন্তত ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের দাবি এই এলাকা থেকে জুয়ার সবকটি বোর্ড বন্ধ করে দেয়া হউক।
এবিষয়ে কাচিকাটা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোয়াল্লেম বেপারি বলেন, জিতু মল্লিক ও আল আমিন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি বিষয়টি জেনেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে সংগঠন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি। এতে যেই জড়িত থাকুক, প্রশাসনের উচিত সঠিক তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া। আমি থানা কমিটির সাথে সমন্বয় করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে জুয়ার সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটকৃতদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জুয়া খেলার অপরাধে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
রুপম/আল