উত্তরায় বিমান বাহিনীর দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ও আহতদের অধিকাংশই মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী।মর্মান্তিক ঘটনার পরপরই একটি রহস্যজনক ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়; যা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত রবিবার (২০ জুলাই) ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেয়া হয়, যেখানে লেখা ছিল, ‘একটি স্কুল ভবন ধসে পড়তে যাচ্ছে, যার ফলে বহু শিশু প্রাণ হারাবে। আমরা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে এগিয়ে আসতে দেখছি।‘ পোস্টে আরও বলা হয়, ‘এই বিপর্যয়ের মূল কারণ হবে ভবনের অবহেলাজনিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। আমি একজন স্থপতি হিসেবে এই বার্তা দিচ্ছি।‘
পরদিন সোমবার (২১ জুলাই) ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর একই পেজ থেকে আরেকটি পোস্ট দেওয়া হয়। তাতে দুর্ঘটনার একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখা হয়, ‘আমরা সবসময় আগে ভাগেই সতর্কবার্তা পাঠাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেগুলো গুরুত্ব পায় না। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।‘
পোস্টে আরও দাবি করা হয়, বর্তমানে একের পর এক বিপর্যয় ঘটছে। তাই আমাদের বার্তাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং আগে থেকেই প্রতিকার খুঁজুন—না হলে ক্ষতির দায় আপনাকেই নিতে হবে।‘
‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজটির অ্যাবাউট সেকশনে দেখা গেছে, পেজটি যুক্তরাষ্ট্র ও নাইজেরিয়া থেকে পরিচালিত হয়। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখেই বিভিন্ন সময় ভবিষ্যৎ বিপর্যয় নিয়ে ‘সতর্কবার্তা’ প্রকাশ করে থাকে। তবে এসব বার্তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ভাইরাল পোস্টটি নিয়ে মত দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুল্লাহ আল জাবির। তিনি বলেন, ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ একটি ভুয়া ও প্রতারণামূলক পেজ। ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি নিয়ে আগাম বার্তা দিয়ে, পরে বিমান দুর্ঘটনার সঙ্গে সেটিকে মিলিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা তাদের কৌশল।
তিনি আরও বলেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং সেই সঙ্গে নিজেদের পেজে ফলোয়ার বাড়ানো। এর বাইরে তাদের কোনো সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক জানান, তারা ইতোমধ্যে এই চক্রের আইপি লোকেশন শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পুরো চক্রটি মূলত আফ্রিকা থেকে এসব ভুয়া পেজ পরিচালনা করে থাকে।
তিনি দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পেজ ও পোস্ট থেকে সতর্ক থাকার এবং যাচাই না করে কোনো তথ্য শেয়ার না করার আহ্বান জানিয়েছেন।