রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৭৮ জন। প্রাণ হারিয়েছেন বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামও।
তরুণ এই পাইলটের ডাকনাম ‘সাগর’। তার পরিবার রাজশাহীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ২২৩ নম্বর বাড়ি ‘আশ্রয়’–এ। বাবা তহুরুল ইসলাম একজন আমদানি–রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী, মা সালেহা খাতুন গৃহিণী। দুই ভাইবোনের মধ্যে তৌকির ছিলেন বড়। ছোট বোন বৃষ্টি খাতুন ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বোনের স্বামী তুহিন ইসলাম।
তৌকিরের শিক্ষাজীবন শুরু হয় নিউ গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল, রাজশাহীতে। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সেখানে পড়ার পর সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। ৩৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। ওই বছরই যোগ দেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে।
তার সাবেক শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ বলেন, “তৌকির ছিল অত্যন্ত মেধাবী, ভদ্র, শান্ত ও মিশুক। ছোটদের স্নেহ করত, বড়দের সম্মান করত।” সহপাঠীদের কাছেও ছিলেন প্রিয়। সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল, আত্মবিশ্বাসী এবং দায়িত্বশীল হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
মাত্র এক বছর আগে তার বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
স্বপ্নপূরণের পথে পা বাড়িয়েছিলেন তৌকির ইসলাম। কিন্তু এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তা থেমে গেল চিরতরে। তার অকাল মৃত্যুতে শুধু পরিবার নয়, পুরো দেশ শোকগ্রস্ত।