ঝিনাইদহে গত বছর জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ছাত্র–জনতার ওপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের চালানো হামলার ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করায় এক অনলাইন এক্টিভিস্টকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনলাইন এক্টিভিস্ট শিমুল হোসেন (৩২)।
এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন শিমুল হোসেন। এ ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতার হুমকি দেয়ার একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। অভিযুক্ত সজিব হোসেন শৈলকূপা উপজেলার কদমতলা গ্রামের আনজির হোসেনের ছেলে। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সজিব হোসেন ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
সাধারণ ডায়রিতে শিমুল হোসেন উল্লেখ করেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তথ্য ও ভিডিও ধারণের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি তিনি অনলাইন এ্যক্টিভেষ্ট হিসেবে কাজ করছেন। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে তিনি শহরের ২ নম্বর পানির ট্যাংকি পাড়ায় নিজের “শিমুল মিডিয়া” ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। ওই সময় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি সজিব হোসেন ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কল করে, কেন ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে জানতে চান।
জবাবে শিমুল বলেন, এই ভিডিও সবাই তো শেয়ার করছে। আমি করলে দোষ কি? ছাত্রলীগ নেতা সজিব এ সময় বলেন, “সবাই করুক তুই করবি ক্যা” এক পর্যায়ে হুমকী দিয়ে সজিব হোসেন বলেন “জুলাই তো আরো আসবে, সামনের জুলাই তুই কনে থাকবি? তুমার চোখে গুলি করে হত্যা করা হবে”।
হুমকি সম্বলিত অডিও কল রেকর্ড বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ছাত্রনেতাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বুধবার মধ্যরাতে শিমুল হোসেন ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি জিডি করেছেন, যার জিডি নং ১০৩৭।
উল্লেখ্য, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট শিমুল হোসেন গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার সমন্বয়ক এলমা খাতুনের স্বামী। তিনি ভিডিও এডিটিং ও অনলাইন মিডিয়া কর্মরত।
এ বিষয়ে জানতে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সজিব হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই মনোজ কুমার অভিযোগটি তদন্ত করছেন। আমরা দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সোহাগ/আল