কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার মূলহোতা এবং ‘মব’ সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী মো. শাহ পরানকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–১১।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানী কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব–১১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে র্যাব–১১ এর আভিযানিক দল কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন কাবিলা বাজার এলাকা থেকে মো. শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাহেরচর গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী ও ছোট ছেলে শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ঘটনার ২ মাস আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম্য শালিসে জনসম্মুখে বড় ভাই ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চর–থাপ্পর মারে। পরবর্তী সময় শাহ পরান তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সুযোগের সন্ধানে থাকে। শালিসের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে লোন নেয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন ভুক্তভোগী নারীর বাবা–মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে রাত সাড়ে ১১টার দিক কৌশলে ওই নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করে।
একই সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগী নারীর বাড়ির আশপাশে অবস্থান করা শাহ পরান ও ফজর আলীর পূর্বশত্রু একই গ্রামের আবুল কালামসহ অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ ৮ থেকে ১০ জন দরজা ভেঙে প্রবেশ করেই ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং পরে ওই ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ঘটনার পর মূলহোতা শাহ পরানসহ আবুল কালাম ও অন্য আসামিরা আত্মগোপন করেন।
র্যাব–১১–এর অধিনায়ক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার শাহ পরান স্বীকার করেছেন যে, পূর্বশত্রুতার কারণে তার ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে তার নির্দেশনা মোতাবেক অন্যদের সহায়তায় ভুক্তভোগী নারী ও ফজর আলীকে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটায়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার শাহ পরানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে।
এসএ