ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্কসহ চারটি মাঠ অপারেটর নিয়োগের নামে ইজারা দেয়ার ব্যবস্থা অবিলম্বের বাতিল করার আহ্বান জানায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন।
রবিবার (১৮ মে) পবার সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত সময়ে অপারেটর নিয়োগের নামে চারটি মাঠ বিভিন্ন ক্লাব, প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে দেয় সিটি কর্পোরেশন। পার্কগুলো হচ্ছে শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্ক– ইয়ুথ ক্লাবকে , চেয়ারম্যান বাড়ী মাঠ– শহীদ যায়ান চৌধুরী ব্যবস্থা পরিষদকে, কামাল আতাতুর্ক পার্ক– গ্লোবাল ক্যাপাটিসি বিল্ডিং এবং কনসালটেন্সী লিমিটেডকে, বনানী সি ব্লাক পার্ক– এস বি মার্বেল কর্পোরশনকে দিয়ে দেয়। ক্লাব ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ করে, মাঠে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা শুরু করে। একাজের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন এবং ক্লাবসমুহ মাঠ পার্ক আইন লঙ্ঘন এবং আদালতের নির্দেশনা অমান্য করেছে।
শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্ক–র দখলকারী গুলশাল ইয়ুথ ক্লাব মাঠ দখল করে বেআইনী স্থাপনার তৈরি শুরু করলে পরিবেশবাদী সংগঠনরা তীব্র আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু তৎকালীন সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জনদাবী উপেক্ষা করে ক্লাবকে তাদের বেআইনী কাজ চালিয়ে দিতে সমর্থন দেয়। মাঠের বিভিন্ন স্থাপনা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গুলশাল ইয়ুথ ক্লাব বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে এই মাঠটি দখল করে ব্যবহার করে আসছে। এই পার্ক ও মাঠ নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টে ০৩ টি মামলা দায়ের এবং নিস্পত্তি হয়, যার ০৩ টিতেই মহামান্য আপীল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ রাজউককে দখল উচ্ছেদের এবং সিটি কপোরেশনকে কোন ভাবে লীজ বা দখল দেওয়া বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। সর্বশেষ মাঠ হতে ক্লাব উচ্ছেদের বিষয়ে রাজউকের নোটিশের বিরুদ্ধে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব–র রীট আদালত খারিজ করে দেয় এবং মাঠটি উম্মুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান করে। কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তৎকালীন সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় মাঠ দখল করে নেয়। ইতিমধ্যে রাজউক মাঠটি উদ্ধারে সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশনা দিলেও এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ হয়নি।
মাঠ ও পার্কটি গুলশান ইয়ুথ ক্লাব ধ্বংশ করে কিছু লোকের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে রুপান্তর করছে। বৃষ্টির পানি শোষণের জন্য রাখা উম্মুক্ত স্থানটি তারা ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে, ফুটবলের টার্ফ বানাচ্ছে। এভাবে পার্কের ঘাসে ঢাকা সবুজ চত্ত্বর তারা ধংস করেছে এবং এই পরিবর্তনে মাধ্যমে তারা পার্কটিকে নিজেদের দখলে নিয়েছে। মাঠ ও পার্কের সকল প্রবেশ পথে নিজেদের নিরাপত্তা প্রহরী বসিয়ে জনসাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এভাবে পার্ক ও মাঠ দখল, এতে ইচ্ছামত স্থাপনা তৈরিসহ বেয়াইনিভাবে এর প্রকৃতি ও শ্রেণীর পরিবর্তন করে ভাড়া বা ইজারা প্রদানের মাধ্যমে বানিজ্যিক কাজে ব্যবহার সুস্পষ্টভাবে আইন পরিপন্থী।
আমরা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে অপারেটর নিয়োগের নামে মাঠ দখলের সকল চুক্তি বাতিলে আহবান জানাই। একই সাথে মাঠ হতে ক্লাবের সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারণ এবং ভাঙ্গা, মাঠটি মাষ্টার প্লান অনুসারে সংস্কার, মাঠে সিটি কর্পোরেশনের নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ, শিশুদের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত, মাঠসমূহ দখল করে সরকারী সম্পত্তি ক্ষতি এবং ভোগকারী প্রতিষ্ঠান হতে ক্ষতিপুরণ আদায়ের আহবান জানাই। আমরা রাজউক এবং গণপুর্ত মন্ত্রণালয়কে মাঠ, পার্ক জলাধার আইন সংশোধনে দাবি জানাই।
আল