পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে বিস্ফোরক–বোঝাই একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে বুধবার (৭ মে) দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) এ খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও পাকিস্তানি চ্যানেল সামা টিভি।
পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে সামা টিভি জানিয়েছে, ভূপাতিত ড্রোনটির আকার ছিল প্রায় ১.৫ থেকে ১.৮ মিটার, অর্থাৎ পাঁচ থেকে ছয় ফুট দীর্ঘ। এটি ভারতের ভেতর থেকে রিমোটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিল এবং লাহোর শহরের সংবেদনশীল ভবনগুলোর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ড্রোনটি বিস্ফোরক বোঝাই ছিল এবং সম্ভবত এটি হামলার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট পৌঁছে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করছে।
এর আগে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছিল, বুধবার রাতে লাহোরে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তবে তখন এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এই ঘটনার ঠিক আগেই ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরসহ দেশটির নয়টি স্থানে ভারত রাতভর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “ভারতের সব বিমানই আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী তাৎক্ষণিক ও সফল প্রতিরোধ গড়ে তোলে।”
তিনি আরও দাবি করেন, ভূপাতিত যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে তিনটি রাফালে ফাইটার জেট, একটি মিগ–২৯ এবং একটি এসইউ–৩০ রয়েছে।
এদিকে উত্তেজনার মাঝেই আশাব্যঞ্জক একটি অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। পাকিস্তানের উপ–প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার নিশ্চিত করেছেন, পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) নাসির আসিম এবং ভারতের এনএসএ অজিত ডোভাল সরাসরি ফোনালাপ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ যোগাযোগ হয় বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত উত্তেজনার পাশাপাশি লাহোরে ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্য এবং কৌশলগত সম্পর্কের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।