ঢাকার লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা দুই তরুণীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও জনতাকে উসকে দেয়ার অভিযোগে গোলাম মোস্তাকিম রিন্টুকে (৬২) আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (৯ মার্চ) রাতে লালমাটিয়ার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ–কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ডিএমপি উপ–কমিশনার জানান, ভুক্তভোগী দুই তরুণীর জবানবন্দি নিয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে গোলাম মোস্তাকিম রিন্টুকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ লালমাটিয়ার আড়ংয়ের পাশে একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণী চা–সিগারেট খাচ্ছিলেন। এ সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক বয়স্ক ব্যক্তি (রিন্টু), যিনি তরুণীদের প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে আপত্তি জানান এবং তাদের চলে যেতে বলেন। এমনকি দোকানদারকেও দোকান বন্ধ করে দিতে বলেন।
এ নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তরুণীদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে এক তরুণী তার গায়ে চা ছুঁড়ে মারেন। এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি আশপাশের লোকজনকে ডাকেন, যা দ্রুত সংঘর্ষের রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ গিয়ে দুই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও, অনেকেই নারীদের প্রতি সহিংস আচরণের নিন্দা জানান।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই ঘটনায় নারীদের ওপর জনতাকে উসকে দেয়ার প্রবণতা একটি গুরুতর ইস্যু, যা সমাজে নারী নিরাপত্তার ঝুঁকির দিকটি সামনে নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে, অনেকে প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তরুণীদের আচরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া বা জনতাকে উসকে দেয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।