দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। তিনি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখনই সময় টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার।‘
রবিবার (১২ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক্সে দেয়া একটি পোস্টে কেমি ব্যাডেনোচ অভিযোগ করেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও তাকে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার অর্থ মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল রেখেছেন। এ পরিস্থিতি সরকারের আর্থিক সমস্যাগুলো সমাধানে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির একজন সংসদ সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে রয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে তার নাম উঠে এসেছে। এছাড়া, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছ থেকে সন্দেহজনক উৎসে ফ্ল্যাট পাওয়ার তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’ জানিয়েছে, ডাউনিং স্ট্রিট ইতিমধ্যে টিউলিপের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে। তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর একটি তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের নীতিশাস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা বিষয়টি তদন্ত করছে। যদিও টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক একটি বিভ্রান্তিকর ইস্যু হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার শাসনামলের দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্র নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এসব কারণেই বিরোধী দল তার পদত্যাগ বা বরখাস্তের দাবি জানাচ্ছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন।‘ ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্রও জানান, টিউলিপের বিকল্প প্রার্থীদের নিয়ে যে গুজব ছড়িয়েছে তা ভিত্তিহীন।
ডাউনিং স্ট্রিটের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে ব্রিটিশ প্রশাসনে অস্বস্তি বাড়ছে। বিরোধী দল এবং সংবাদমাধ্যমের ক্রমাগত চাপের মুখে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। যদিও প্রধানমন্ত্রী স্টারমার আপাতত তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
সূত্র: বিবিসি, দ্য টাইমস