জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে দেয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তিনি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর এ আপিল করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।
গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ওই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দণ্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি শহীদদের পরিবার এবং আহতদেরও যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া অপর অভিযোগে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে এই আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে গত ১৫ ডিসেম্বর আপিল করেছে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)।
ওই দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁনকে দুটি সাজা দেয়া হয়। একটি আমৃত্যু কারাদণ্ড, আরেকটি মৃত্যুদণ্ড। আমরা আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করেছি। আপিলে আমরা মোট আটটি যুক্তি (গ্রাউন্ড) দিয়েছি।
মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে রয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পরিবার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
এর আগে গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। প্রথমবারের মতো এ মামলার বিচারের অধিকাংশ শুনানির দিনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।