বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

৫০ শতক জমি কিনে বানানো হয় জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার টাট্রিউলি গ্রামে ৫০ শতক জমি কিনে প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়ে সশস্ত্র জিহাদে অংশ নিতে কথিত হিজরতের নামে নিজ নিজ বাসা ছাড়েন ওই শিবির থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ জন। সবাই ওই শিবিরে পৌঁছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিলেন। ইমাম মাহমুদের অনুসারী জামিল ওই জমি কিনেছিলেন।

রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

কুলাউড়ার আস্তানাটি দুই মাস আগে করা হয়েছিল। আস্তানা তৈরি করার জন্য ৫০ শতক জায়গা কেনা হয়েছিল। যার নামে ওই জমির দলিল করা হয়েছিল, সেই দলিলগ্রহীতার নামও আমরা পেয়েছি। তবে কত টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়েছিল, সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাদের সদস্যদের জিহাদের জন্য যা যা করা প্রয়োজন ছিল, সবকিছুই ওই আস্তানা থেকে করা হতো বলে জানান সিটিটিসির প্রধান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট মধ্যরাতে রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। ফরহাদ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, কুলাউড়ায় একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কথিত ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে তাঁর বেশ কিছু অনুসারী আস্তানা স্থাপন করেছেন। সেই সূত্র ধরে সিটিটিসির সহকারী কমিশনার (এসি) শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এক সপ্তাহ ধরে কুলাউড়া এলাকায় অনুসন্ধান করে এই জঙ্গি আস্তানা সন্ধান পায়। এরপর গতকাল ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে জঙ্গি সন্দেহে চারজন পুরুষ ও ছয়জন নারীকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি ইউনিট।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পরকালীন পুরস্কার পাওয়ার কথা বলে ইমাম মাহমুদ মানুষকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতেন। লোকজনকে বলতেন, জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রথম ধাপ হলো গৃহ ত্যাগ; তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্দশ্যে ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার জন্য তাঁরা সবাই ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন।

সিটিটিসির ভাষ্য, সম্প্রতি যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকদের পরিবারসহ এবং পরিবার ছাড়া নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তথ্য পেয়ে এ–সংক্রান্তে অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসি। তাঁদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানা থেকে চিকিৎসক সোহেল তানজীম রানা, যশোর থেকে ঢাকার নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী ফাহিম, জামালপুর থেকে এরশাদুজ্জামান শাহিনসহ আরও অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে ৭ আগস্ট রাজধানীর গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কথিত ইমাম মাহমুদের আহ্বানে হিজরতের নামে পরিবার ছেড়ে আসা ৬ জন নারীসহ ১০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা আট শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সংগঠনটির নাম ইমাম মাহমুদের কাফেলা। এই নামেই তারা লোকজনদের উদ্বুদ্ধ করেছে।

সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘কুলাউড়ার আস্তানাটি দুই মাস আগে করা হয়েছিল। আস্তানা তৈরি করার জন্য ৫০ শতক জায়গা কেনা হয়েছিল। যার নামে ওই জমির দলিল করা হয়েছিল, সেই দলিলগ্রহীতার নামও আমরা পেয়েছি। তবে কত টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়েছিল, সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাদের সদস্যদের জিহাদের জন্য যা যা করা প্রয়োজন ছিল, সবকিছুই ওই আস্তানা থেকে করা হতো।’

 

মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More