দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) সভাপতির চেয়ারটি আঁকড়ে ধরে আছেন দেশসেরা স্ট্রাইকার কাজী সালাউদ্দিন। কিংবদন্তী এই ফুটবলার ২০০৮ সালে বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। টানা চার মেয়াদে ফুটবলের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ এই যাত্রার আবসান ঘটতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। গত শনিবার (১৫ সেক্টেম্বর) ঘোষণা দেন; বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। এতে করে দীর্ঘ ১৬ বছের অধ্যায়ের ইতি টানতে যাচ্ছেন। কিংবদন্তী এই ফুটবলার সমালোচনার দিক দিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। তার এই দীর্ঘ পথচলায় সফলতার থেকে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী।
১৯৮৪ সালে সব ধরনের ফুটবল থেকে আবসর গ্রহণ করেন তৎকালীন দেশ সেরা ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন। এরপর ১০ বছর পর ফিরে আসেন কোচ হিসাবে। কোচিং করিয়েছেন আবাহনী, জাতীয় দল, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রকে। তারপর দীর্ঘ একটা সময় ছিলেন ফুটবল দুনিয়ার বাইরে। ২০০৩ সালে বাফুফে সহ–সভাপতি নির্বাচিত হয়ে জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হন। ”ফেডারেশনে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে সভাপতি হওয়ার বিকল্প নেই” সেই উপলব্ধি থেকে সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে সভাপতি পদে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে পাসও করেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কাজী সালাউদ্দিনকে। তারপর থেকেই শুরু হয় কাজী সালাউদ্দিনের একক আধিপত্য।
প্রথম মেয়াদে ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কাজী সালাউদ্দিনের নামে সেই আর্থে কোন সমালোচনাই হয়নি। বরং কুড়িয়েছেন বেশ কিছু প্রসংশা। প্রথম মেয়াদে চেয়ারে বসেই চমক দিতে শুরু করেন কাজী সালাউদ্দিন। ধুকতে থাকা দেশের ফুটবলে এনে দিয়েছেন স্পন্সর। ২০১২ সালে আর্জেন্টিনা ঢাকায় এসে নাইজেরিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলে।
জাতীয় দলে কাজী সালাউদ্দিন অর্থ ব্যয়েও ছিলেন শীর্ষে। দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলন, বিদেশে ক্যাম্প, বিদেশি কোচ সবই দিয়েছেন তিনি। বিপরীতে সেই আর্থে কোন সফলতাই এনে দিতে পারেননি তিনি। তার আমলে ২০০৯ এবং ২০২৩ সালে সাফের সেমিফাইনালে খেলাই সালাউদ্দিনের সর্বোচ্চ অর্জন।
কাজী সালাউদ্দিনের আমলে সবচেয়ে উপেক্ষিত দেশের জেলা ফুটবল। জেলা ফুটবলের কোন আবকাঠামোগত উন্নয়নে হাত দেননি সালাউদ্দিন। কাজী সালাউদ্দিনের একক সিদ্ধান্ত মাঝে মাঝে ফুটবলের ওপর বেশ প্রভাব পড়তো।
গত বছর নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক না পাঠানোটা ছিলো কাজী সালাউদ্দিনের একক সিদ্ধান্ত। সাম্প্রতিকালে হামজা চৌধুরীর বিষয়টাও আটকে রেখেছেন তিনি।
ইমরান হাসান/এজে/দীপ্ত সংবাদ