শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনাসদস্য তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম সেই হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর আজ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।
নানা উত্থান পতন এর পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে প্রায় সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকালে আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকে ঘিরে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করত। ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর কবরে শ্রদ্ধা জানানোসহ নানা আয়োজন করা হতো।
তবে এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। গত বছর ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের পতন হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে এখন আর সরকারি ছুটি নেই। গত বছর এই ছুটি বাতিল করা হয়।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন সহ নানা আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস পালিত হলেও এবছর সমাধিতে নেই কোনো দলীয় আয়োজন। অন্যান্য সাধারণ দিনের মতোই নিরিবিলি পরিবেশ বিরাজ করছে টুঙ্গিপাড়ার সর্বত্র। তবে কোনো ধরনের সহিংসতা বা অপ্রিতিকর ঘটনা যেন না সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ সহ টুঙ্গিপাড়ার বিশেষ বিশেষ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো: সারোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে গোপালগঞ্জে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যতটুকু আশঙ্কা আছে, সেটি মোকাবেলা করার মতো পর্যাপ্ত পুলিশ রয়েছে। এপিবিএন, সেনা বাহিনী, র্যাব ছাড়াও পোশাকে এবং সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত রয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।