শেখ হাসিনার শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ যেন একটি হত্যা ও গুমের জনপদে পরিণত হয়। বিচারহীনতার ফলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শুধু চোখের জলই ফেলছেন গত ১৬ বছর ধরে। সরকারি দলের নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে ত্বকী, আশিক, চঞ্চল ও ভুলু সহ একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলে।
দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বড় ভাইয়ের ছেলে আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমরকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একই বছরের ১২ নভেম্বর ভ্রাম্যমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ওসমান পরিবারের নির্দেশে চাষাড়া কলেজ রোডে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবেন। কিন্তু সেই অভিযোগপত্র আর আদালতে পেশ করা হয়নি।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন ত্বকীর পিতা।
সন্তানের হত্যার সঙ্গে শামীম ওসমান ও তার ছেলে অয়ন ওসমানও জড়িত বলে দাবি ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বির।
শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে, ত্বকী ছাড়া তারা হত্যা করেছে আশিক, চঞ্চল, ভুলু ও মিঠুসহ অনেককে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ওসমান পরিবারের এসব অপকর্মের বিচার দাবি জানান বিশিষ্টজনরা।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের চাঞ্চল্যকর মামলায় ওসমান পরিবার জড়িত বলে অভিযোগ করেন নিহতদের পরিবারের স্বজনরা। তাই ওই মামলার পুনর্তদন্ত দাবি করেন তারা।