স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বেঁধে দেওয়া হার্টের রিংয়ের (স্টেন্ট) নতুন দাম আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানী মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে সার্ভিস চার্জের ৫ শতাংশ ধরেই স্টেন্ট মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।। নতুন দামে স্টেন্ট কেনা হলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।’
ডা. মো. আকতার হোসেন আরও বলেন, জীবন রক্ষাকারী এই গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল ডিভাইসের দাম সহনীয় ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার স্টেন্ট, পেসমেকার, বেলুন, ক্যাথেটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের বরেণ্য কার্ডিয়াক, ভাস্কুলার ও নিউরো সার্জনদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি গঠন করে। ৩ দফা সভার পর কমিটি বাজারে প্রচলিত আমেরিকান ৩টি কোম্পানির স্টেন্টের মূল্য পর্যালোচনা করে। প্রতিবেশী দেশের দাম, ট্যাক্স, ভ্যাট ও অন্যান্য চার্জ বিবেচনায় এনে গত ৮ জুলাই সভার সুপারিশের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৩ আগস্ট স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য পুনঃনির্ধারণ করে।
তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয় নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১ অক্টোবর থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি পরামর্শে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর পর্যায়ক্রমে হার্টের চিকিৎসায় ব্যবহৃত সব মেডিকেল ডিভাইসের দাম যৌক্তিকভাবে পুনঃনির্ধারণ বা নতুনভাবে নির্ধারণের কাজ চালিয়ে যাবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ৩টি কোম্পানির ১০ ধরনের ডিভাইসের মূল্য কমানো হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৮৮ হাজার টাকা। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আরও ৩০টিসহ মোট ৩৩ কোম্পানির হার্টের স্টেন্টের দাম কমানো হবে।
এর আগে গত ৩ আগস্ট জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, তিন কোম্পানির ১০ ধরনের স্টেন্টের দাম কমিয়ে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়। তবে একটি স্টেন্টের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। স্টেন্ট আমদানি প্রতিষ্ঠানভেদে খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে স্টেন্টের দাম সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ কমেছে।
উল্লেখ্য, স্টেন্ট বা রিং পরানোই বাংলাদেশে হার্টের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। কারো হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালনে ব্লক বা বাধার সৃষ্টি হলে ডাক্তার তাকে এক বা একাধিক রিং পরানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
হার্টে রিং পরানোর পদ্ধতিকে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বলা হয়। এই পদ্ধতিতে, একটি সরু ক্যাথেটার ব্যবহার করে ধমনীতে একটি ছোট, জাল আকৃতির নল (স্টেন্ট) স্থাপন করা হয়। এটি রক্তনালীকে খোলা রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিণ্ডে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
এসএ