প্রধানমন্ত্রী আপনার (এমপি শামীম ওসমান) পরিবারের প্রশংসা করে বলে হাতির পাঁচ পা দেইখেন না। কেন প্রশংসা করে সেটা বোঝার চেষ্টা করবেন। আপনার পূর্ব পুরুষদের জন্য করে। মানুষের কাতারে আসুন। না হলে নারায়নগঞ্জবাসী প্রতিহত করবে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে নগরীর ২ নং রেলগেট এলাকায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নতুন প্রজম্মের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ওই মান্দাত্তা আমলের রাজনীতি এখন আর নাই। নতুন প্রজম্ম এখন আর মিথ্যা, অভিনয়, চুপাবাজি, দাপ্পাবাজি এ সমস্ত জিনিষ তারা প্রচ্ছন্দ করেন না। তারা রিয়েল জিনিষ চায়। চোখের সামনে সব কিছু চায়। সে চিন্তা শেখ হাসিনা করছেন। তিনি নারীদের শক্তিশালী করতে প্রচুর কাজ করছে। কিন্তু আপনারা হয়তো সে জিনিষগুলো অনেকেই জানেন না। তাই অনুরোধ করবো সে জিনিষগুলো সকলকে জানানোর জন্য। এমনগুলো কোন জেলা নাই শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোয়া নাই। সে জিনিষগুলো আমাদের গ্রুপ করে করে মানুষের কাছে পৌছাতে হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আইভী আরো বলেন, যেহেতু আমাদের সামনে বছর নির্বাচনী বছর। এখন নির্বাচনী বছর আসবে অসংখ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে যায়। একদম বহির্বিশ্বের ষড়যন্ত্র ও আন্তর্জাতিক দেশের সকল ষড়যন্ত্র। তাছাড়া ডান বাম একত্রে হয়ে কিভাবে সরকারকে নামানো যায় সে ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়। এগুলোকে প্রতিহত করতে হবে এবং আমাদেরকে মানুষের কাছে যেতে হবে। মাননীয় প্রধানরমন্ত্রী কি করছেন এবং কার উদ্দেশ্য কি সেই জিনিষগুলো আমাদের মাঝখানে প্রতিফলিত হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শুধু ডাইসে বড় বড় কথা বলে। শুধু দাপ্পাবাজি করা । কার পিছে কাকে লাগাইয়া দেওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জের এত সুন্দর পবিত্র অর্গানাইজেশন নতুন একটি বিল্ডিং করেছি কারো মনে হয় জমবে না। বাম দলের নেতা হাবিব সাহেব ওনি এত বেশী কথা বলেন। ওনি নাকি গরীব মানুষের জন্য। গরীব মানুষের নমুনা কি এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। সে পর্যন্ত আর কিছু পেলনা আমার সুইপার দিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। কি নোংরা রাজনীতি কি নোংরা রাজনীতি হ্যা।
এমপি শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে মেয়র আইভী আরো বলেন, এই ধরনের বড় ধরনের নেতাদের এই ধরনের নোংরা রাজনীতি শোভা পায় না। ১৯৮১ সালে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার বাইরে প্রথম জননেত্রী শেখ হাসনিাকে সংবর্ধনা দিয়েছিল আলী আহাম্মদ চুনক। ওনি যেদিন সংবর্ধনা দিলেন ঠিক ওইদিনে কতিপয় নোত এই যে ঢাকা-ফতুল্লা রোডে ময়লা ফেলে রেখেছিল। আমার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা এগুলো দাড়িয়ে থেকে সুইপার লাগিয়ে পরিস্কার করেছিল সেদিন। তারপর সংবর্ধনা দিয়েছিল এবং সেই সংবর্ধনায় কি হয়েছিল সেই ইতিহাস নারায়ণগঞ্জবাসী জানে। আমি চাই না সেই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি নারায়ণগঞ্জে আর না হোক। আমি সাবধান করতে চাই ওই নেতাকে। নোংরামি করেন এই নোংরামির জবাব জনগনই দিবে। আমি আপনাকে সব জবাবই দিতে পারবো। কিন্তু আমি নোংরামি করতে পারবো না। এত নিচে আমি নামতে পারবো না। আমার পরিবারিক শিক্ষা এত নিচে নামার নয়।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু জবাব প্রস্তুত আছে। ইতিমধ্যেই দেখেছেন বন্দরে হুন্ড বাহিনীর হুন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে জনগন। এই হুন্ডা বাহিনীকে কিন্তু প্রতিহত করেছে সাধারণ জনগন। তারও কিছুদিন পূর্বে নবীগঞ্জ থেকে হুন্ডা রেখে দিয়েছিল। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করেছে। এই ভূমিদস্যূদের সময় কিন্তু চলে এসেছে। আমার কিছু বলতে হবে না। আমার কাজ হচ্ছে এই শহরের মানুষকে সাহসীকতা করা এবং জাগিয়ে তোলা। আমি অত্যন্ত প্রহরীর মত আপনাদের পাশে আছি নারায়ণগঞ্জবাসী।
আজকে যারা ৫০/৬০ বছর ধরে এই শহরে জমিদারিত্ব করছেন । সেই জমিদারির অবসান ঘটাতে চাই। ওই সাম্রাজের অবসান ঘটাতে চাই। শুরু হয়ে গেছে জনগন শুরু করেছে। নোংরা রাজনীতি করতে পারবো না কিন্তু আপনার নোংরামির জবাব দিতে পারবো সাহসীকতার সহিত। আমি ১৯৮১ সালের পুনারবৃত্তি করতে চাইনা। কিন্তু মনে রাখবেন যদি উতপ্ত করতে চান। তবে ছাড় দেওয়া হবেনা। বাড়াবাড়ি ভাল নয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়েনর কথা বলি। উন্নয়ন করতে দেন।
তিনি আরো বলেন, ইভটিচিং বন্ধ করেন। জাতীয় সংসদের সদস্য আপনি। পোষ্টের নাম নিয়ে ইভটিচিং করেন আপনি। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিচে নামাইয়েন না। আপনার (এমপি শামীম ওসমান) পরিবাবেরর প্রধানমন্ত্রী প্রশাংসা করে দেখে হাতির পাঁচ পা দেইখেন না। প্রশংসা কেন করেন সেটা বুঝার চেষ্টা করেন। সম্মান দেওয়া চেষ্টা করেন। আপনার পূর্ব পুরুষের জন্য করে। সুতরায় আসুন মানুষের কাতারে আসেন। বিভক্তি বন্ধ করেন। চেলা চামচা যেগুলো আছেন শিখাইলেন সেই চেলাচামচাদের থামতে বলেন। না হলে বন্দর ও নবীগঞ্জ যেভাবে প্রতিহত করা হয়েছে নারায়নগঞ্জবাসীও সেভাবে করবে।
তিনি আরো বলেন, আজ যারা এ শহরে জমিদারি করছে তাদের জমিদারির অবসান ঘটাতে চাই। লুটপাট করতে পারবো না কিন্তু আপনাদের অপকর্মের জবাব আমি দিতে পারবো। সকল কাজে বাধা দেন মেনে নেই। কিন্তু এগুলো বরদাস্ত করবো না। প্রধানমন্ত্রী আপনার পরিবারের প্রশংসা করে বলে হাতির পাঁচ পা দেইখেন না। কেন প্রশংসা করো সেটা বোঝার চেষ্টা করবেন। আপনার পূর্ব পুরুষদের জন্য করে। মানুষের কাতারে আসুন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, জাতীয় পরিষদের সদস্য এড.আনিছুর রহমান দিপু সহ সেচ্ছাসেবকলীগ ও জেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবন্দ।