বাদী চান হত্যা মামলার আসামী হবে ৪ জন। অথচ আসামী করা হয়েছে দুই হাজার ৮৭ জনকে। এমন তথ্য জেনে হতবাক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা শাহিন হত্যা মামলার বাদী নিজেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগষ্ট নিহত হয় পিকাপ চালক মো: শাহিন। সেদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগ থেকে শাহিনের মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় তার পরিবার। যাত্রাবাড়ি থানার সামনে শাহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন এমন অভিযোগ এনে ঘটনার ১ মাস পর যাত্রাবাড়ি থানায় মামলা করে তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রীসহ পুলিশের ১৪ জনের নামে হত্যার অভিযোগ আনেন মামলার বাদী। এছাড়া আরেও ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলায় অজ্ঞ্যাত আসামী করা হয় ২ হাজার জনকে।
মামলার অগ্রগতি জানতে যাত্রাবাড়ী থানায় গিয়ে দেখা যায় আগুনে পুড়িয়ে দেয়া থানায় চলছে সংস্কারের কাজ। আর থানার কার্যক্রম চলছে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরের ডেমরা থানায় !
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান এরই মধ্যে ১৫ দিনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলেছে ৩ বার।
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, মামলার এজাহারে বাদির নাম পরিচয়ে রয়েছে গড়মিল। এজাহারে দেয়া মোবাইল নম্বার অন্য একজনের। ফোন দিলে কখনও চাঁদপুর আবার কখনও ঝিনাইদহ বলে।
মাললার বিষয়ে কথা বলতে এজাহারে দেয়া ঠিকানায় গিয়েও দেখা মেলেনি বাদির।
বাদীর ভোলার ঠিকানায় গিয়ে পাওয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে স্বপ্না বেগম (মামলার বাদী) বলেন, চার জনের নামে মামলা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।
এজাহারে ১৮ নম্বর অভিযুক্ত হাসিবুল আলম জানান, ঘটনার অনেক আগে থেকেই আমি কানাডায় আছি। একটি গোষ্ঠীকে হেয় প্রতিপণ্য করার জন্য তারা এ মামলা দায়ের করে। এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমি মনে করি। শাহিনের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি, আল্লাহ তাকে বেহেশত নসীব করুক এবং একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা করছি।
এদিকে হয়রানি করতে মিথ্যা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন নগর পুলিশ।
ডিএমপি উপ–পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, তদন্ত ছাড়া আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি না। হয়রানি করতে নয় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্ত্বিতেই অভিযোগপত্র দেয়া হবে।
তানভীর খন্দকার/এসএ