সৌদি আরবের পবিত্র আরাফার ময়দানে হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি এবং বিশেষভাবে ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করেছেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।
বৃহস্পতিবার (৯ জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি) সৌদি স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঐতিহাসিক মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের খুতবা প্রদান করেন তিনি। খুতবার শেষাংশে শায়খ সালেহ আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলেন, “হে আল্লাহ! পূর্ব ও পশ্চিমের সকল মুসলমানের অবস্থা সংশোধন করে দিন। তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সংহতি গড়ে তুলুন। হে আল্লাহ! ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের হেফাজত করুন, ক্ষুধার্তদের আহার দিন, আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দিন এবং শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করুন।”
খুতবার শুরুতেই শায়খ সালেহ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য, সংহতি ও পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “শয়তান মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু। তাই মুসলমানদের উচিত দ্বন্দ্ব না করে একে অপরকে সহযোগিতা করা এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা।”
তিনি আল্লাহভীতি ও তাকওয়া অবলম্বনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “তাকওয়া ইমানদারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নেক আমল পাপসমূহ মুছে দেয়। তাই আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হওয়া, যেন আমরা তাঁকে দেখছি—এমনভাবে।”
শায়খ সালেহ ইবনে হুমাইদ পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীলতা, বিশেষ করে বাবা–মায়ের সঙ্গে সদ্ব্যবহার এবং লজ্জাশীলতার গুরুত্বও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “লজ্জাশীলতা বা হায়া হলো ইমানের একটি অঙ্গ। প্রতিশ্রুতি পূরণ, নম্রতা ও সদাচরণ ইসলামী জীবনের অন্যতম রূপ।”
তিনি আরও বলেন, “হজের এই মহান সময়ে বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করুন, দুনিয়া ও আখিরাতের মঙ্গল প্রার্থনা করুন এবং মন্দ কাজে বাধা দিয়ে ভালো কাজে সহযোগিতা করুন। কেননা, আল্লাহ বলেছেন, ‘নেক কাজে একে অপরকে সাহায্য করো এবং গোনাহর কাজে সহায়তা করো না।’”
পবিত্র হজ উপলক্ষে মসজিদে নামিরাহ থেকে প্রদত্ত এই খুতবা সৌদি সরকারের উদ্যোগে বিশ্বের প্রায় ৩৫টি ভাষায় অনূদিত হয়ে সম্প্রচার করা হয়, যার মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, চাইনিজ, তুর্কি, রোহিঙ্গা, তামিল, পশতু, রুশ, ফরাসিসহ বহু ভাষা রয়েছে।
উল্লেখ্য, আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পবিত্র আরাফার দিন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে সমবেত হয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন। এদিনের খুতবা মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হয়।