মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

‘স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, কিন্তু চোখে দেখতে পারছি না’

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীতে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে চোখ হারানো ফেনীর ছাগলনাইয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. নাহিদুর রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, আমার অন্তরে সুখ আছে কিন্তু চোখে দেখতে পারছি না।

এ বিষয়ে দীপ্ত টেলিভিশনের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নাহিদের। এ সময় নাহিদ বলেন, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি, বাংলাদেশে বৈষম্য চাই না। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আমার অন্তরে সুখ আছে। কিন্তু আমার চোখ দিয়ে আমি সুন্দর দেশটাকে দেখতে পাচ্ছি না। এটা আসলে আমার ভেতরের অনেক কষ্ট থেকে বলছি যে, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। যেদিন আমি সুখ করব, আনন্দ করব ওইদিন আমার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দৌড়াতে হয়েছে চট্টগ্রামের দিকে। আমার বাবামাছোট ভাই সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ে। এমন স্বৈরাচার আর কখনো চাই না। আমি চাই কোনো দেশে এমন স্বৈরাচার না আসুক।

তিনি আরও বলেন, ৪ আগস্ট শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিরীহ ছাত্রজনতার ওপর আওয়ামী লীগছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। এ সময় তিনি ফেনীর মহিপালে সার্কিট হাউস রোডে অন্তত চারজনকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। অসংখ্য আহত ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালেও পাঠান তিনি। এরপর থেকে ফেনী ছিল নিস্তব্ধ। পরদিন সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে শুনে বিজয় মিছিল নিয়ে শহরের দিকে যায় ফেনীবাসী। মিছিলটি খেজুর চত্বরে গেলে লাভ মার্কেটের দিক থেকে হেলমেট পরা ৩০৩৫ জন সন্ত্রাসী তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে সবার আগেই গুলিবিদ্ধ হন নাহিদ।

এই শিক্ষার্থী বলেন, আমি মিছিলের সামনে ছিলাম। আমার হাতে একটি পতাকা ছিল। হঠাৎ করে হেলমেট পরা ৩০৩৫ জন সন্ত্রাসী গুলি চালানো শুরু করে। প্রথম গুলিটা আমার চোখে লাগে। আমি আর কিছু দেখছিলাম না। আমি চোখে হাত দিয়ে বসে পড়ি। তখন তারা আমার সারা গায়ে গুলি করে।

নাহিদ বলেন, আমি পরিবারের বড় ছেলে। আমার ওপর অনেক দায়িত্ব। এতদিন পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো কাজও করতাম। এখন আমার চোখ ভালো হবে কিনা ডাক্তাররা কিছুই বলতে পারছেন না। আমার স্বপ্ন ছিল সরকারি চাকরি করব। কিন্তু আমি এক চোখ দিয়ে কিছু করতে পারব কিনা জানি না।

নাহিদের বাবা মো. বাহার মিয়া একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। যেই বড় ছেলে পরিবারের হাল ধরবে ভেবে তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন সে এখন চোখ হারানোর শঙ্কায়। চিকিৎসা ব্যয় বহনের সাধ্যও নেই তার। যা চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত করে দিয়েছে নাহিদের বাবাকে।

তিনি বলেন, আমি ছোট চাকরি করি। আশা ছিলো বড় ছেলে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু সে তো নিজেই আশঙ্কাজনক অবস্থায়। চোখটা যদি ভালো হয় তাহলে অন্তত সে কিছু একটা করে চলতে পারবে। এ জন্য তাকে নিয়ে বড় হাসপাতালে এসেছি। দেখি আল্লাহ তার কপালে কি রেখেছে। যেকোনো মূল্যে নাহিদ তার চোখ ফিরে পাবে এটাই পরিবারের চাওয়া।

আবদুল্লাহ আলমামুন/এজে/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More