সামনেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব– ঈদুল আজহা। এই ঈদ উপলক্ষে সম্পদশালী মুসলমানরা কমবেশি সবাই পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। কিন্তু কোরবানির মাংস ঠিকমতো প্রক্রিয়াজাত না করার কারণে অনেক সমস্যা হতে পারে। তাই জেনে নিন কীভাবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাংস সংরক্ষণ করবেন।
১. দ্রুত প্রক্রিয়াজাতকরণ:
কোরবানির পর মাংস দ্রুত প্রক্রিয়াজাত করুন। মাংস কাটা, পরিষ্কার করা এবং ভাগ করার কাজ দ্রুত শেষ করুন। বেশি সময় ধরে বাইরের তাপমাত্রায় না রেখে দ্রুত সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করুন।
২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:
মাংস প্রক্রিয়াজাত করার আগে সরঞ্জাম ও পাত্র যেমন– মাংস কাটার ছুরি, বোর্ড, পাত্র ইত্যাদি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখুন। মাংস কাটার আগে এবং পরে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
৩. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
মাংসকে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত স্থানে রাখুন। বেশি সময় ধরে রুম তাপমাত্রায় মাংস রেখে না দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ফ্রিজে রাখুন।
৪. মাংস ভাগ করা:
মাংস বড় বড় টুকরো না রেখে ছোট ছোট টুকরো করে ভাগ করুন, যাতে সংরক্ষণ ও ব্যবহারে সুবিধা হয়। মাংসের বিভিন্ন অংশ যেমন– চর্বি, হাড় এবং মাংস আলাদা করে ভাগ করুন। বড় বড় টুকরো মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে সংরক্ষণ করুন।
৫. প্যাকেজিং:
মাংস সংরক্ষণের জন্য এয়ারটাইট ফ্রিজার ব্যাগ, প্লাস্টিক র্যাপ, বা ফয়েল পেপার ব্যবহার করুন। ভ্যাকুয়াম সিলার থাকলে সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে। প্যাকেজিং করার সময় মাংস থেকে যতটা সম্ভব বাতাস বের করে দিন, যাতে বরফ না জমে এবং মাংসের গুণাগুণ ঠিক থাকে। একবারে যতটুকু মাংস ব্যবহার করবেন প্রতি প্যাকেটে ততটুকু পরিমাণে প্যাকেট করুন।
৬. ফ্রিজে সংরক্ষণ:
৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা কম তাপমাত্রায় মাংস ৩–৫ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের জন্য মাংস ফ্রিজারে (মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা কম) রাখুন। এভাবে মাংস ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে।
৭. লেবেলিং:
প্যাকেটের উপরে সংরক্ষণের তারিখ লিখে রাখুন, যাতে কোন প্যাকেট আগে ব্যবহার করতে হবে তা সহজে নির্ধারণ করা যায়।
৮. মাংস গলানো:
ব্যবহারের আগে মাংস ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করে ফ্রিজের নিচের শেল্ফে রেখে ধীরে ধীরে গলান। এতে মাংসের গুণাগুণ বজায় থাকে। তাড়াহুড়ো থাকলে মাইক্রোওয়েভের ডিফ্রস্ট অপশন ব্যবহার করতে পারেন। মাংস প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখে ঠান্ডা পানিতে গলাতে পারেন, তবে প্রতিবারে পানি পরিবর্তন করতে হবে। তবে একবার গলানো মাংস পুনরায় ফ্রিজে রাখবেন না। এতে মাংসের গুণাগুণ নষ্ট হয় এবং ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
৯. অতিরিক্ত নিরাপত্তা:
মাংস সংরক্ষণের সময় যদি বিদ্যুৎ চলে যায়, ফ্রিজ এবং ফ্রিজারের দরজা বন্ধ রাখুন যাতে ঠান্ডা বজায় থাকে।
সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ