নওগাঁয় টাকা লেনদেন ও পরকীয়া সম্পর্কের জেরে বুলবুল আহমেদ (৩২) নামে এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) হাবিব হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে সোমবার রাতে শহরের চকমুক্তার মন্ডলপাড়া (চারা বাগান) মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বুলবুল নীলফামারি জেলার উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাহান উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে হাবিবের স্ত্রী মোসলেমা বেগম (২৯) পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ শহরের চকমুক্তার মন্ডলপাড়া (চারা বাগান) মহল্লায় গত এক বছর থেকে কাজী আব্দুস সামাদের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন হাবিব ও তার স্ত্রী মোসলেমা বেগম। তাদের ২০ বছরের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। হাবিবের গ্রামের বাড়ি নীলফামারি জেলার উত্তর দুরাকুটি গ্রামের। তবে তার স্ত্রী মোসলেমার বাবার বাড়ি নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লায়। নিহত বুলবুল আহমেদ ও হাবিব সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
সোমবার রাতে কাজী আব্দুস সামাদ এর বাসার পেছনে হাবিব ও মোসলেমার সাথে বুলবুলের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল। এক সময় গায়ে আগুন নিয়ে চিৎকার করে দৌঁড়ে পাশের ডোবা ভেবে কচুরিপানায় ঝাঁপ দেন বুলবুল। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে বস্তা ও পাশে পড়ে থাকা ইটের গুড়ি (রাবিশ) দিয়ে আগুন নেভায়।
তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে রেফার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান বুলবুল।
এলাকাবাসী জানান, ওই মহল্লার গলিতে ‘একটি প্রেমের ঘটনা’ কাগজে লেখা অবস্থায় মোসলেমা ও বুলবুলের ছবিসহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে বোঝা যায় তাদের দুজনের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ওই কাগজে আরও লেখা ‘মোসলেমাকে বিভিন্ন সময় বুলবুল টাকা দিয়েছেন এবং তাকে নিয়ে সংসার করতে চান’। এমনকি হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গুরুতর আহত অবস্থায় বুলবুলকে বলতে শোনা যায়, ‘মোসলেমা ও হাবিব তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।’
বুলবুলের ভাড়া বাসার মালিক কাজী আব্দুস সামাদ স্ত্রী শাহারা বেগম বলেন, ‘গত এক বছর ধরে মোসলেমা ও হাবিব আমাদের বাসায় ভাড়া ছিল। রাত ৮টার দিকে গায়ে আগুন নিয়ে দৌঁড়ে দোকানের সামনে দিয়ে একজন কচুরিপানার পড়ে লাফ দেয়। পরে কয়েকজন আগুন নিভিয়ে আহত ছেলেটিকে হাসপাতালে নেয়।’
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগানোর ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। হাবিব-মোসলেমা ও বুলবুলের সাথে টাকার লেনদেনের একটি বিষয় ছিল। তাছাড়া পরকীয়া সম্পর্ক থাকতে পারে। এ ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে।
এমি/দীপ্ত