নীলফামারীর ডোমারে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে অনশন করছেন এক সন্তানের জননী। বৃহস্পতিবার(০১জুন) দুপুর থেকে ডোমার পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি অভিজিৎ সর্বঙ্গ পাপনের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন ওই নারী। এদিকে বাড়িতে অনশন করতে দেখে পালাতে গিয়ে নিজের পা মচকিয়ে হাসপাতালে নিচ্ছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিজিৎ সর্বঙ্গ পাপন ডোমার পৌর এলাকার ছোটরাউতা সাহাপাড়া এলাকার দেবরঞ্জন সর্বঞ্জের ছেলে। তিনি ২০২২ সালের ২৯ জুলাই ডোমার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে ওই নারী ছাত্রলীগ নেতা পাপনে বাড়িতে অবস্থান নেন। ওই নারীকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে পাপনের বিরুদ্ধে। ওই নারীর চিৎকার ও কান্নায় স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ডোমার থানা পুলিশের সদস্যরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতেছিলেন। এক সময় সবার অগোচরে বাড়ির পিছন দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন পাপন। পালানোর সময় এলাকাবাসী ও পুলিশ তাকে ধাওয়া আটক করে। এসময় পড়ে গিয়ে তার পা মচকে যায়। পরে পুলিশ হেফাজতে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি পাপনের বিয়ে নিয়ে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছিল। ছাত্রলীগ নেতা পাপনের সাথে ওই নারীর একাধিক ছবি ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, পাপনের সাথে ২০১৩ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। ২০১৪ পঞ্চগড়ের বোদেশ্বরি মন্দিরে আমরা বিয়ে করি। বিয়ে পরে ও আমাকে বলে এখন কাউকে জানাইও না এখন। আমার মায়ের হার্টের সমস্যা, আমি আমার মা‘কে আস্তে আস্তে ম্যানেজ করে তোমাকে বাড়ি নিয়ে যাবো। এখন তুমি ভাড়া বাড়িতে থাকো, আমি যখন সাহাপাড়া নারু সাহা নামে এক লোকের বাড়িতে ভাড়া ছিলাম। সে সময় তার মা আমাদের সম্পর্কের কথা জানতে পারে, পরে তার মা আমাকে আজেবাজে ভাষায় গালিগালাজ করে ও তার মা আমাকে মারতে আসে। তার পরে আমি যে বাড়িতে ভাড়া ছিলাম সে বাড়ি ওয়ালা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি বলেন, তারপর আমরা ডোমার ও নীলফামারী শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ভাড়া করে সংসার করে আসছিলাম। গত একমাস থেকে পাপন আমার সঙ্গে দেখাও করে না, খোঁজ খবর রাখে না। এমনকি আমার মোবাইল ফোনও রিসিভ করে না। সে অনেক ক্ষমতাবান। তার কাছে মন্ত্রী মিনিস্টার, নেতা, পুলিশ সব তার পকেটে। এখন সে আমাকে স্ত্রী বলে স্বীকার করছে না। আমি যেখানে ভাড়া সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে বুঝতে পারবেন আমার স্বামী কে। আমার জীবন যৌবন সব শেষ করে এখন আমাকে স্ত্রী হিসেবে মানে না। আমাকে খারাপ বানানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। আমার তিন মাসের পেটের বাচ্চা নষ্ট করে দিছে। আজ আমি তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি স্ত্রীর মর্যাদা পেতে। সে আমাকে মারধর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি স্ত্রীর মর্যাদা চাই।
অভিজিৎ সর্বঙ্গ পাপন বলেন, তার তিনটা স্বামী। সে বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে ব্লাকমেইল করে টাকা খায়। আমার কাছে প্রতারণা করে টাকা চায়। তার একটা ছেলে আছে। আমি একটা অবিবাহিত ছেলে। সে আমার মাকে দরে মেরেছে। আমি একটা অবিবাহিত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণ ছেলে। আমার সম্পর্কে এলাকায় সবাই ভালো জানে। সে আজকে পরিকল্পিত ভাবে আমার মাকে মেরে ঘরে ঢুকেছে।
ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পাপন একটু অসুস্থ অনুভব করায় তার আমাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আল/দীপ্ত সংবাদ