আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশে প্রথম রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সোয়াপ-এ বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ই-বর্জ্য কমিয়ে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পণ্য বিক্রি করার সময় গ্রাহকদের সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সোয়াপ। এই প্ল্যাটফর্মটি অনেক নিম্ন-আয়ের পরিবারকে পণ্য ক্রয়, বিক্রয় এবং বদল করতে সক্ষম করছে পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং প্রযুক্তিতে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করছে।
প্রিসিরিজ-এ রাউন্ডে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য রাজধানী ঢাকায় আইসিটি টাওয়ারে আইডিয়া প্রকল্পের কার্যালয়ের সভাকক্ষে উক্ত প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, হেড অব পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট হাসান এ. আরিফ, সোয়াপের সিইও পারভেজ হোসেন, সিওও তন্ময় সাহা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের উপস্থিতিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
২০২০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে, সোয়াপ গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালুতে (জিএমভি) ৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি জেনারেট করেছে, যার বর্তমান মাসিক জিএমভি ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। সোয়াপ এখন পর্যন্ত ৮০ হাজারের বেশি গ্রাহকদের সেবা দিয়েছে এবং কার্বন পদচিহ্ন কমানোর অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে ৩৬৫০ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করেছে এবং ৩৮৬ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য কমিয়েছে ।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড হলো আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্রথম এবং একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড, যা ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দকৃত মূলধন নিয়ে ২০২০ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে। জাতিকে দ্রুত উদ্ভাবন করতে সক্ষম করার এই প্রয়াসে, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড রি-কমার্স বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়ে সোয়াপে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ বলেন, রি-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে সোয়াপ যে কাজ করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং সোয়াপে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ, এটিকে ইন্ডাস্ট্রিতে শীর্ষস্থানীয় হতে সাহায্য করবে। আমি আশা করি, তারা স্টার্টআপ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেন, স্টার্টআপ বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো দেশীয় স্টার্টআপদের বৃদ্ধি এবং এমন উচ্চতায় পৌঁছাতে সহায়তা করা, যা আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করে। স্থানীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম সোয়াপ-এর মতো সম্ভাব্য উদ্যোগগুলোর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়, সঠিক কৌশল প্রয়োগ এবং ফোকাস ঠিক রেখে কাজ করতে পারলে আমাদের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে সোয়াপ সফল স্টার্টআপ হিসেবে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ তৈরি করতে সক্ষম হবে।
সোয়াপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা পারভেজ হোসেন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সোয়াপ এমন একটি সমাধান প্রদান করে, যা বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপকভাবে প্রয়োজন। ব্যবহৃত পণ্যের জন্য একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করে, আমরা আমাদের দেশের নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের পরিবারগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে প্রযুক্তিতে অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করছি এবং সার্কুলার ইকোনমিকে উৎসাহিত করছি। ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এবং হালকা যানবাহনের পুনঃব্যবহার ও জীবনকাল বৃদ্ধি করে, আমরা আমাদের ডলার রিজার্ভের ওপর চাপ কমিয়ে এই জাতীয় পণ্য আমদানির চাপ কমাতে পারি।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সূত্র ধরে, স্টার্টআপ বাংলাদেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করছে এবং সোয়াপে বিনিয়োগ করে সেই ঐতিহ্যকে অব্যাহত রেখেছে। সোয়াপ স্টার্টআপে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্টার্টআপ বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ২০টি বিনিয়োগ করেছে।
তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সরকার উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে দৃঢ় বিশ্বাসী এবং আমরা বিশ্বাস করি যে স্টার্টআপগুলো সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এই উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোকে সমর্থন করার জন্য সরকার স্টার্টআপ বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রযুক্তি স্টার্টআপে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।