শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫
শুক্রবার, এপ্রিল ১১, ২০২৫

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে জেলায় জেলায় ঈদ উদযাপন

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) বাংলাদেশে উদযাপিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদল আজহা। তবে তার আগেই বুধবার (২৮ জুন) দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদ পালিত হলো। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রাম, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ঈদ পালিত হয়েছে।

দীপ্ত টিভির ব্যুরো ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো ঈদ উদযাপনের খবর

বরিশাল

বরিশাল নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ ঈদ উদযাপন করছেতারা সবাই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ এলাহবাদ জাহাগীরিয়া শাহছুফি দরবার শরীফের অনুসারী। দীর্ঘদিন থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঈদরবানিসহ যাবতীয় ধর্মীয় আচা পালন করে থাকেন তারা।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁজকাঠী মমতাজিয়া শাহসুফি জাহাগিরিয়া মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত শেষে পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে পশু কোরবানি করা হয়

এছাড়াও নগরী এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে আগাম ঈদের প্রায় অর্ধশত জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে

নোয়াখালী

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ গ্রাম, জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের চারটি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের নামাজে ওই চার গ্রামের বেশকিছু পরিবারের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।

জানা গেছে, এই চার গ্রামের প্রায় ৭০৭৫ পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। একই সঙ্গে এসব পরিবারের সামর্থবান অনেকে পশু করবানিও করেন। তারা চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী

পটুয়াখালী

পটুয়াখালীতে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বুধবার ২১ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ উদযাপন করছেন মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আহা।

বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের উত্তর নিশানবাড়িয়া জাহাগিরিয়া শাহ্সূফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া জেলার সদর উপজেলার ৪ গ্রামে, কলাপাড়ার ৭ গ্রামে, রাঙ্গাবালির ২ গ্রামে, গলাচিপার ৩ গ্রামে, দুমকির ২ গ্রাম ও বাউফল উপজেলার ৩ গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্থানীয়ভাবে এরা চট্রগ্রামের এলাহাবাদ সুফিয়া ও চানটুপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১০০ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদ পালন করে আসছেন তারা।

দিনাজপুর

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে দিনাজপুরসহ ৬টি উপজেলায় ৪০টি গ্রামের মুসল্লিদের একটি অংশ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড় পার্টি সেন্টারে ঈদুল আহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও চিরিরবন্দর উপজেলার রাবার ড্যাম এলাকায়, কাহারোল উপজেলা সদরের জয়নন্দ গ্রামে, ১৩ মাইল গড়েয়া এলাকায়, বোচাগঞ্জ উপজেলার তেতরা গ্রামে, বিরল উপজেলার ভাড়াডাঙ্গী গ্রামে ও বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা বাজার জামে মসজিদে এবং জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর জামে মসজিদে কয়েকশ’ পরিবারের মানুষ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন দিনাজপুর শহর ও আশপাশের কয়েকটি এলাকার মানুষ। এই জামায়াতে পুরুষ, মহিলা ও শিশুসহ ৩০০ শতাধিক মুসল্লি অংশগহণ করেন।

এই জামায়াতে ইমামতি করেন দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার একটি মাদরাসার শিক্ষক ও উপজেলা সদরের বাসিন্দা মাওলানা আবু বকর বিন আব্দুল্লাহ।

উল্লেখ্য, দিনাজপুর জেলায় ২০০৭ সাল থেকে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করে আসছে মুসলমানদের একটি অংশ। প্রথমে মুসল্লির সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে প্রায় ৩০০ জনে দাঁড়িয়েছে

ঝিনাইদহ

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে তিনটি স্থানে ঈদুল আহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল টায় হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকার চটকাবাড়িয়া গ্রামে মসজিদে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজে ঈমামতি করেন, মাওলানা রেজাউল ইসলাম।

রেজাউল ইসলাম জানান, বৃষ্টির জন্য নামাজ দেরিতে পড়তে হয়েছে। প্রায় শতাধিক মুসল্লি চটকাবাড়িয়া মসজিদে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেছেন।

উপজেলাজুড়ে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার আজ ঈদুল আযহা উদযাপন করছেন বলেও তিনি জানান।

গাইবান্ধা

গাইবান্ধায় চার গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন।

জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা গ্রামের মধ্যপাড়ার নতুন জামে মসজিদে তালুক ঘোড়াবান্দা, সদর উপজেলার ফলিমারি, দুর্গাপুর, শ্যামপুর, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর গ্রামের কিছু মুসল্লিরা ঈদেও নামাজ আদায় করেন।

চট্টগ্রাম

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে চট্টগ্রামের পটিয়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, আনোয়ারাসহ ৬০ গ্রামে আজ পবিত্র ঈদু উল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

বুধবার সকাল টায় কাঞ্চননগর জাঁহাগিরিয়া শাহ সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ ময়দানে দরবার শরীফের পীর সাহেব হযরত মাওলানা শাহ সূফি মুহাম্মদ আলী শাহ্ এর ইমামতিতে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে রুইয়াতিল হেলাল বিষয়ক ফতোয়ার ভিত্তিতে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল আহা এবং চন্দ্রোদয় নির্ভর ইসলামি সব ইবাদত ও অনুশাসন পালন করে আসছেন।

চাঁদপুর

চাঁদপুরের প্রায় ৪০টি গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আহা। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানি।

অন্যদিকে সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরিফের আরেক পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী।

সাদ্রা দরবার শরীফের বর্তমান পীর শাইখ মো. আরিফ চৌধুরী জানান, প্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে আমরা ঈদ উদযাপন করে থাকি।

জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। পরে তিনি দরবার শরীফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

বুধবার ঈদ উদযাপিত হওয়া চাঁদপুরের গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির বেশ কয়েকটি গ্রাম।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More