দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৪৯ রানের হারে সেমিফাইনালের অসম্ভব স্বপ্নও কার্যত শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের বিখ্যাত ওয়াংখেড়েতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান করেছেন ডি কক। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৬ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ১১১ রান এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। এই হারে বাংলাদেশ পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে নেমে গেল।
রিয়াদ যে বিশ্বকাপের দলে থাকবেন কিনা টুর্নামেন্ট শুরুর পনেরো দিন আগেও জানতেন না। তবে বরাবরের মতোই ত্রাতা হয়ে হাজির হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ডানহাতি এই ব্যাটারের কাঁধে ভর করে সেই লজ্জা এড়িয়েছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে টাইগার ইনিংসের সর্বোচ্চ ১১১ রান। তাতেই হারের ব্যবধান কমিয়েছে বাংলাদেশ।
১৪০ বলে ১৫ বাউন্ডারি ও ৭ ছক্কায় ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেন ডি কক। যা এবারের বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এদিন যেন শুধু ছক্কা মারার প্রতিজ্ঞা করে মাঠে নেমেছিলেন ক্লাসেন। ৪৯ বলে ৯০ রান করার পথে মেরেছেন ৮টি ছক্কা। যেখানে বাউন্ডারি মেরেছেন শুধু ২টি। শেষে এসে ১৫ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও খেলেছেন ডেভিড মিলার।
এর আগে আগের ম্যাচে ফিফটি করা ওপেনার তানজিদ তামিমকে দিয়ে। আবারও বাজে বলে আউট হলেন তামিম। সপ্তম ওভারের প্রথম বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন জানসেন। খাটো লেন্থের সেই বলে বাউন্ডারি না পাওয়াটাই যেখানে অবাক করা ব্যাপার, সেখানে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন তামিম। হাফ পুল, হাফ হুকের মতো শট খেলতে গিয়ে তার গ্লাভসে লেগে বল জমা পড়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে। এর পরের বলেই ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চারে নেমে ব্যর্থ হলেন সাকিব আল হাসান। এই আসরে টাইগারদের ভরসার প্রতীক মুশফিকুর রহিমও কিছু করতে পারলেন না। লিটনের সাথে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করার চেয়ে শর্ট বলে ছয় মারার ইচ্ছা হলো এই উইকেটকিপার ব্যাটারের। সরাসরি ক্যাচ গেল ডিপ থার্ডে। জেরাল্ড কোয়েৎজির উদ্যাপন অবশ্য হয়েছে দেখার মতোই। ৫০ এর আগেই চার উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। ইনিংস খেলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশের হয়ে একাই লড়াই চালান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নাসুম আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তবে ৮ম উইকেটে হাসান মাহমুদকে সঙ্গী করে ফের লড়াই চালান বাংলাদেশের এই ‘সাইলেন্ট কিলার’। ৬৭ বলে তুলে নেন চলতি আসরের প্রথম ফিফটি।
নবম উইকেট জুটিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪র্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ। রাবাদার বলে এক রান নিয়ে ১০৪ বলে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলেন তিনি। শতকের পর অবশ্য বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। ১১১ বলে ১১১ রান করে কোয়েৎজির বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরার পথে দক্ষিণ আফ্রিকানদের অভিনন্দনও পেয়েছেন।
তিনি ফেরার পর দক্ষিণ আফ্রিকার এই ম্যাচ শেষ করতে লেগেছে ৬ বল। শেষ ব্যাটার হিসেবে ১১ রানে ফেরেন মুস্তাফিজুর। ফলে সহজেই জয় তুলে নেয় আফ্রিকা।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ