সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল–ফাশের শহর থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। প্রায় ১৮ মাসের অবরোধ, অনাহার ও ধারাবাহিক বোমাবর্ষণের পর আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ব্যাপক সহিংসতা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ইউজিন বায়ুন জানায়, গত কয়েকদিনে সহিংসতা থেকে বাঁচতে হাজারো মানুষ পাশের তাওইলা শহরে আশ্রয়ের চেষ্টা করছে, যা এল–ফাশের থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। তিনি আরও বলেন, আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতির কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিটি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, যোগ করেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, এখনো প্রায় দেড় লাখ মানুষ শহরটিতে আটকা রয়েছে।
আরএসএফ তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, আরব মিলিশিয়াদের মতোই তারা আরব নয় এমন জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
বিচার ছাড়াই হত্যার অভিযোগে নিজেদের এক সদস্য, আবু লুলু নামের মিলিশিয়াকে আটক করেছে আরএসএফ। বিবিসি ভেরিফাই নিশ্চিত করেছে, এল–ফাশেরের কাছে কয়েকজন নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় তাকে শনাক্ত করার পর এ পদক্ষেপ নেয়া হয়।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতা দখল নিয়ে সংঘাত চলমান। এতে এখন পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে আরএসএফ সুদানের পশ্চিমাঞ্চল ও করডোফানের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, আর সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুম ও পূর্বাঞ্চল ধরে রেখেছে। একসময় এই দুই পক্ষ একসঙ্গে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল, কিন্তু বেসামরিক শাসনে ফেরার আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
সূত্র: বিবিসি