ঠাকুরগাঁওয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ও বাজার পানির নিচে। এতে ভোগান্তি শহরবাসীর।
বুধবার (১২ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের বিভিন্ন অলিগলি সড়কগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। কোথাও কোথাও হাঁটু সমান। পানি বের হওয়ার রাস্তা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় শহরের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েন। ময়লা পানির ভ্যাপসা গন্ধে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
এদিকে ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় অনেক মার্কেটের দোকানপাটের ভেতর ঢুকছে পানি। এতে আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নষ্টসহ ভিজে গেছে বেশ কিছু পণ্য।
দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজের এমন বেহাল দশা থাকলেও ব্যবস্থায় উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
জলাবদ্ধতা সৃষ্ট শহরের বেশকয়েকটি এলাকা ঘুরে জল জটে আটকে পড়া ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা পানিতে ডুবলেও খোঁজ নিতে আসেন না কোনো কাউন্সিলর, এমনকি মেয়রও। শহরবাসী দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এমন ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে নিচ্ছেন না কোনো ব্যবস্থা।
জানা যায়, বৃষ্টির পানি জমে শহরের নরেশ চৌহান সড়ক, নর্থ সার্কুলার রোড, গোয়ালপাড়া, কলেজপাড়া, কালিবাড়ি, শাহপাড়া, মুসলিমনগরসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এমনকি বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকেছে। ড্রেনেজগুলোর বেহাল দশার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা রনি বলেন, এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। রাস্তাটিও নিচু। ড্রেন অপরিষ্কার থাকে। বৃষ্টি হলে শহরে কোথাও পানি জমুক আর না জমুক, এই এলাকায় পানি জমবেই।
নরেশ চৌহান সড়কের ব্যবসায়ী উজ্জল, মুকুলসহ অনেকে জানান, প্রথম শ্রেণির পৌরসভার অবস্থা যদি এমন হয়; তাহলে আর কি বলার থাকবে। পানি ঢুকে ব্যবসায়িক সামগ্রীসহ জিনিসপত্র ক্ষতি হচ্ছে এ দায় কে নেবে। পৌর মেয়র আছেন বলে মনে হয় না। আমরা দাবি করি ব্যবস্থায় উদ্যোগ নিন। না হলে আন্দোলন করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মকসেদ বলেন, কালিবাড়ি রোডের ড্রেনটি পরিষ্কার করতে মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সংস্কার না করায় ড্রেনগুলো উপচে পড়ছে। তাই আগের মতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তাঘাটে পানি জমে যাচ্ছে।
হাজি পাড়া এলাকার বাসিন্দা ময়নুল জানান, অপরিকল্পিত নগরায়ন, বেহাল দশার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই বাড়িতে হাঁটু পানি জমে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় শহরবাসী ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ সমস্যাটির সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন না।
সমাজ উন্নয়নকর্মী মনিরুজ্জামান বলেন, বৃষ্টি হলেই পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে চলাচলে ভোগান্তিসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে। অনেক এলাকায় বাড়িঘরেও পানি উঠে যায়। চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলতে হচ্ছে শহরবাসীকে। তাই শহরবাসীর জন্য প্রয়োজন আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা।
প্যানেল মেয়র সুদাম সরকার জানান, এ মেয়রের সময়ে কাউন্সিলররাও রীতিমত বিরক্ত। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি কোন ভূমিকা রাখছেন না। সে কারণে রাস্তাঘাট ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা বলেন, প্রকল্প আসলে প্রতিটি কাজ বাস্তবায়ন করা হবে৷
এজে/মঈনুদ্দীন তালুকদার/দীপ্ত সংবাদ