বুধবার, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫
বুধবার, জানুয়ারি ২৯, ২০২৫

সাড়ে ৪ বছর বয়সে কোরআনে হাফেজ শিশু আহমাদ

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

মাত্র সাড়ে ৪ বছর বয়সেই মায়ের কাছে কোরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। ১০ মাসে তিনি হিফজ সম্পন্ন করেন। তার বর্তমান বয়স ৪ বছর ৬ মাস ২৯ দিন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ রাদিয়াল্লাহু আনহায় হিফজ সম্পন্ন করেন মাসুম।

তার শিক্ষক ছিলেন তারই মা, যিনি তাকে অত্যন্ত যত্ন ও আন্তরিকতায় হিফজ সম্পন্ন করিয়েছেন। হিফজের সময় আহমাদ কুরআনের বাংলা অর্থও শিখেছেন, যা তার প্রতিভার আরও একটি প্রমাণ।

বিশ্বখ্যাত ক্বারি ও বিচারক শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আজহারীর মতে, এই বয়সে হিফজ সম্পন্ন করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। ইরান বা আলজেরিয়ায় ৫ বছর বয়সে হিফজের দৃষ্টান্ত থাকলেও আহমাদের মতো সাড়ে চার বছরে এ অর্জন অভূতপূর্ব। আহমাদ তার হিফজ সম্পন্ন করতে সময় নিয়েছে মাত্র ১০ মাস ১৮ দিন।

শিশু আহমাদের মায়ের একান্ত ইচ্ছা তিনি যেন বিশ্বমানের মুত্তাকি, মুখলিস হাফেজ ও আলেম হিসেবে গড়ে ওঠেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে সে তওফিক যেন দান করেন, সে দোয়াই কামনা করেছেন তিনি।

বিস্ময় শিশু আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা খ্যাতিমান টিভি উপস্থাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা বলেন, মহান রবের দরবারে কোটি কোটি কৃতজ্ঞতা, তিনি দয়া মায়া করে আমার কলিজার টুকরো আহমাদকে তার মহান গ্রন্থ আল কোরআন হিফজ করার তওফিক দান করেছেন। আমাদের সন্তানের এ অর্জন আমাদের জন্য শুধু গর্বের নয়, দায়িত্বেরও। আমরা চাই, আহমাদ যেন একদিন বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়ায় ও মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।

হাদিস ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. আহমাদ আবদুল্লাহ ছাকিব বলেন, বাবামায়ের সঙ্গে এই বিস্ময় শিশু যখন আমার মারকাযে বেড়াতে আসে, তখন আমি নিজেই স্তব্ধ হয়ে যাই। শুধু কোরআন হিফজ নয়, সে কোরআনের শব্দার্থও শিখে নিয়েছে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় ঝরঝরে রিডিং করতে পারে। আরবিতে তার স্পিকিং দক্ষতাও অসাধারণ। সব মিলিয়ে এটি এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয়। বুখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিস ধারাবাহিকভাবে মুখস্থ করার লক্ষ্যে সে এগিয়ে যাবে এটাও সে জানায়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে মুসলিম উম্মাহর একজন সুবিজ্ঞ মুখলিস আলেমে দ্বীন হিসাবে কবুল করুন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফেজ হুসাইনুল বান্না বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। এটা আল্লাহর মেহেরবানি যে আল্লাহ এমন শ্রেষ্ঠ সন্তান দান করেছেন। ইয়া রাব্বি লাকাল হামদ। আল্লাহ যুগের আলেমে দীন হিসেবে কবুল করুন।

ঢাকার নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শায়খ শরিফ আবু হানিফ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহপাকের বড় মেহেরবানি। বিনয়ের সঙ্গে আল্লাহর শোকর আদায় করি। কারও বদনজর যেন না পড়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ সংবাদ শুনেই সবাই মাশাআল্লাহ পড়বেন। তার জন্য দোয়া করবেন। সব জ্বীনইনসানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন।

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা বাংলাদেশের জন্য মহান এক গৌরব। আমি বাংলাদেশের মায়েদের প্রতি অনুরোধ করব, আপনারা যদি সন্তানদের কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ও অধ্যবসায় শেখাতে পারেন, তবে এমন সাফল্য সম্ভব। নিজের সন্তানকে সময় দিন, তাদের মননশীলতা ও প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতা করুন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সন্তানকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার পথিক বানিয়ে দিন।

রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী বলেন, কোরআনুল কারিম আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য শ্রেষ্ঠ অলৌকিক বিষয়। আল্লাহ পাকের বিশেষ তৌফিকের ফলেই এই ছোট্ট শিশুটি অতি অল্প বয়সে অল্প সময়ে কোরআনুল কারিমের হিফজ করতে পেরেছে। আমার জানা মতে, এত অল্প বয়সে ও অল্প সময়ে কোরআন হিফজ করার সৌভাগ্য বিশ্বের মাঝে আমাদের বাংলাদেশের এই ছোট্ট শিশুটি করেছে। আল্লাহ পাক তাকে বিশ্বসেরা আলেম ও দা‌ঈ হিসেবে কবুল করেন।

আল

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More