আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে রাজনীতিতে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘সাকিব আজ যেভাবে ধিকৃত হয়েছে, সেটা তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল। আমি দুঃখিত যে, সে আমার পরামর্শ মানেনি।‘
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) টাওয়ারে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, ‘সাকিব যখন রাজনীতিতে নামার কথা ভাবছিল, তখন সে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। একজন অভিজ্ঞ ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমি তাকে স্পষ্ট বলেছিলাম, খেলোয়াড়ি জীবন শেষ না করে রাজনীতিতে না আসাই ভালো। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট দলে যোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম।‘
তিনি বলেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম– তুমি একজন আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেটার, দেশ–বিদেশে তোমার সুনাম আছে। রাজনীতির জন্য এ অবস্থানে ঝুঁকি নেয়া উচিত নয়। আর আওয়ামী লীগে যোগ দিলে সেটা আরও বড় ভুল হবে, কারণ আমি নিজেও জানি দলটি কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ ও স্বৈরাচারী।‘
মেজর হাফিজ জানান, সাকিব তখন কিছু না বললেও চুপচাপ চলে গিয়েছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন, সাকিব আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন। এরপর যা ঘটেছে, তা সবার জানা। আজ সাকিব দেশে ফিরতে পারছে না, ক্রিকেট থেকেও ছিটকে পড়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সে যদি আওয়ামী লীগে যোগ না দিত, তাহলে আজও সম্মানের সঙ্গে দেশে থেকে খেলে যেতে পারতো।
স্মৃতিচারণ করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘আমি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলে ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পর মোহামেডানের হয়ে দুর্দান্ত খেলেও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় দলে ডাক পাইনি—শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে। আমার বাবা জাসদের সহ–সভাপতি ছিলেন, আর এ কারণে আওয়ামী লীগ আমাকে উপেক্ষা করেছিল।‘
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের মূল দলে খেলা একজন খেলোয়াড় হয়ে, স্বাধীন দেশে জাতীয় দলের জার্সি না পাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় হতাশার ঘটনা। এতে প্রমাণ হয়, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কতটা নিমজ্জিত।‘