ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুন:নির্ধারনের চূড়ান্ত তালিকা–২০২৫ প্রকাশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চূড়ান্ত সীমানায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির চূড়ান্ত সীমানায় গাজীপুরে একটি আসন বাড়িয়ে ৬টি করা হয়েছে এবং বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। শিগগিরই গেজেট আকারে তা প্রকাশ করা হবে। ইসির ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ এর ধারা ৬ এবং ধারা ৮ এর অধীন জাতীয় সংসদের পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনী এলাকাসমূহের প্রাথমিক তালিকা প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং উক্ত বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩ এর অধীন পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনি এলাকার বিষয়ে দাবী/ আপত্তি/সুপারিশ/ মতামত আহবান করা হয়।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় প্রজ্ঞাপন মূলে নির্ধারিত সময়সূচী মোতাবেক প্রাপ্ত দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত এর উপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়।’
‘নির্বাচন কমিশন এই আইনের ধারা ৬ এর উপ–ধারা (৪) অনুযায়ী দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সম্বলিত দরখাস্তসমূহে তথ্যাবলী পর্যালোচনা করে এবং শুনানিকালে উপস্থাপিত তথ্য ও যুক্তিতর্ক বিবেচনান্তে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনি এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করতঃ এতদসংগে সংযুক্ত তফসিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ (তিনশত) আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত বিশেষায়িত কমিটি কাজ করে; এরপর ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া ৩০ জুলাই প্রকাশ করে ইসি।
দ্বাদশ সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করা হয়। সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে দাবি–আপত্তি জানাতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
গত ২৭ আগস্ট ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চারদিনে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি আপত্তির শুনানি গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরো জানান, শুনানিতে ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি পরামর্শ বা সুপারিশ পক্ষে পেয়েছি। সব মিলে প্রাপ্ত দাবি আপত্তির সংখ্যা ১ হাজার ৮৯৩টি। ১০ আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি পরামর্শ বা সুপারিশ পাওয়া গেছে। পক্ষ ও বিপক্ষ উভয় দিক থেকেই মতামত এসেছে।
গত ২৪ আগস্ট কমিশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২, ৩, ৫। কুমিল্লা–১,২ ৬, ৯, ১০, ১১। নোয়াখালী–১, ২,৪, ৫।
চাঁদপুর–২, ৩, ফেনী–৩, লক্ষ্মীপুর–২,৩ আসনের দাবি আপত্তি নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
২৫ আগস্ট সাতক্ষীরা–৩ ৪। যশোর–৩, ৬। বাগেরহাট–১, ২, ৩। ঝালকাঠি–১। বরগুনা–১, ২। পিরোজপুর–১,২,৩। চট্টগ্রাম–৩, ৫, ৮, ১০, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান আসনের বিষয়ে কমিশনে দাবি আপত্তি শুনানি হয়।
২৬ আগস্ট মানিকগঞ্জ–১,২,৩। মুন্সীগঞ্জ–১, ২, ৩। গাজীপুর–২, ৬। নরসিংদী–৩, ৪, ৫। নারায়ণগঞ্জ–৩, ৪, ৫।
ঢাকা–১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১০, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ১৯ আসনের বিষয়ে দাবি আপত্তি শোনেন কমিশন।
এছাড়া ২৭ আগস্ট পঞ্চগড়–১, ২, রংপুর–১, কুড়িগ্রাম–৪, সিরাজগঞ্জ–২, ৫, ৬, পাবনা–১। টাঙ্গাইল–৬, জামালপুর–২, কিশোরগঞ্জ–১, সিলেট–১, ফরিদপুর– ১, ৪, মাদারীপুর–২, ৩, শরীয়তপুর–২ ও ৩ আসনের দাবি আপত্তি শুনানি গ্রহণ করেন কমিশন।