নির্বাচনের আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। সরকারের পদত্যাগ চেয়ে রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। মোকাবিলায় কর্মসূচি ছিলো আওয়ামী লীগেরও। দীর্ঘদিন পর সংঘর্ষে জড়ায় আ.লীগ,বিএনপি,পুলিশ।
সংঘর্ষের পর রবিবার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সেখানেও বিভিন্নভাবে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এছাড়াও অগ্নিসংযোগ হয় বেশ কয়েকটি বাসে। গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ সারা দেশে ৬৯৬ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে। এরপরই আসে ৩দিনের অবরোধের ঘোষনা।
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে হরতাল ও অবরোধ আত্মঘাতি বলে মনে করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হরতাল পালিত হলে একদিনে আর্থিক ক্ষতি অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ এফসিএ প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে দীপ্ত নিউজ‘কে জানান, পরাধীন রাষ্ট্রগুলো হরতাল দিলেও স্বাধীন রাষ্ট্রগুলো হরতাল দেয়া কোনো ভাবেই উচিৎ না। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি এ ৩ মাস সাধারণত দেশের অর্থনীতি উর্বর থাকে। এসময় ক্রিসমাস উৎসব উপলক্ষে ইউরোপে দেশের পন্য বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে। কারন, তখন সমুদ্রে জাহাজের জট পড়ে না৷ এ ৩মাসে যদি হরতাল অবরোধ দেয়া হয় তাহলে গার্মেন্টস কর্মীরা অফিসে যেতে পারবে না৷ ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তাদের পন্য ডেলিভারি দিতে পারবে না। এতে করে রপ্তানি ঘাটতি চরমে ঠেকবে।
বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবি
ই
দের মতে, দেশে এখন অর্থনীতির ধস চলছে। এর মধ্যে হরতাল অবরোধের কারনে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের কৃষি মৌসুমের এমন সঠিক সময়ে কাঁচা সবজিসহ অন্যান্য পণ্য সারাদেশে পাঠানো সম্ভব হবে না। ফলে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বেশি। প্রধান ২দলের উচিৎ সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে দেশের স্বার্থে হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হরতাল অবরোধের কারনে দেশে প্রতিদিন ৫–৬ হাজার কোটি টাকা আর্থিক লোকসান হয়। আর যদি ৩ দিনের অবরোধ থাকে তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২১–২৩ হাজার কোটি টাকায়। কারন, দিন দিন এ ক্ষতি বাড়তেই থাকবে। জাতিসংঘের ইউএনডিপি তথ্য মতে, হরতালের কারনে বাংলাদেশে জিডিপির ৫হাজার,৫শ, ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হয়।
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু জানান, হরতাল অবরোধ হলে দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যবসায়ীরা। আর যাদের কারনে এমন ক্ষতিকর পরিস্থিতিতে পড়ে তাদের ব্যবসায়ীরা বর্জন করবে। সেটা যে দলই হোক৷ রাজনৈতিক দলগুলোর উচিৎ এমন কর্মসূচি না দিয়ে ভিন্নভাবে তাদের আন্দোলন করা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে অর্থনীতির আকার ৪ গুণ বেড়েছে। আবার হরতাল শুরু হলে ক্ষতিও বাড়বে সে হারে। হরতালে স্থানীয় বাজারে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হলে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ