সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চিংড়িখালি মাধ্যমিক বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক জয়দেব বিশ্বাসের উপর হামলার প্রতিবাদ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (১ জুন) সকাল ১০টায় চিংড়িখালি মাধ্যমিক বিদ্যা নিকেতনের সামনে শিক্ষক, কর্মচারি ও শিক্ষার্থীরা এ কর্মসুচি পালন করে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসুচি চলাকালে বক্তব্য দেন চিংড়িখালি মাধ্যমিক বিদ্যা নিকেতনের সহকারি শিক্ষক ব্রজেন্দ্রনাথ মণ্ডল, শিক্ষক সুধান্য মণ্ডল, যোগেশচন্দ্র মণ্ডল, সন্দীপ কুমার গায়েন, গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুন্নত আলী গাজী, এসএসইস পরীক্ষার্থী জয়ন্ত মণ্ডল, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী মাইমুনা আক্তার নিশি, অভিভাবক খবিরুল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শেফালী রানী মণ্ডল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যার সময় উপজেলা সদরের নকীপুর জমিদার বাড়ির মাঠের পাশে রাস্তার ধার দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি গাড়ি পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে। এতে জয়দেব বিশ্বাস গুরুতর জখম হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ভামিয়া গ্রামের ইন্দ্রজিৎ আউলিয়া স্থানীয়দের সহযোগিতায় জয়দেব বিশ্বাসকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে খুলনা সিটি হাসপতপাতালে ভর্তি করা হয়। জয়বেদ বিশ্বাসকে মাথায় লোহার রড দিয়ে হামলা করা হয়েছিল মর্মে ডাক্তাররা জানান। এ যাত্রায় তিনি বেঁচে গেলেও তিনি আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। শ্যামনগরের একটি প্রভাবশালি চক্র প্রতিবাদি কণ্ঠস্বর জয়দেব বিশ্বাসকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে ইন্দ্রজিতকে ব্যবহার করে এ হত্যা চেষ্টা চালিয়েছে বলে দাবি করেন বক্তারা। প্রতিকার চেয়ে জয়দেব বিশ্বাস জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, সিকিউরিটি সেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়, মহাপুলিশ পরির্দশকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। যার একটি তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। বক্তারা জয়দেব বিশ্বাসের উপর হামলার পরিকল্পনাকারি, ইন্দ্রজিৎ ও তার পৃষ্টপোষকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তবে ইন্দ্রজিৎ আউলিয়া জানান, তিনি জয়দেব স্যারকে পিতৃসম ভালবাসেন। ভবিষ্যৎ গড়তে নকীপুরের একটি ছাত্রবাসে থাকাকালিন সাড়ে তিন বছর জয়দেব স্যারের সঙ্গে সময় দিয়েছেন। একটি স্কুলে চাকুরি পাইয়ে দেবার কথা বলায় তার কাছ থেকে তিন দফায় সাত লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন জয়দেব স্যার। এখন তাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে চাকুরি করিয়ে দিতে তাকে (ইন্দ্রজিৎ) বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে এতদিন পর কেন জয়দেব স্যার হামলার প্রতিকার চাইলে কেন এ টাকা নেওয়ার ঘটনা বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইন্দ্রজিৎ বলেন, আগামিকাল সাতক্ষীরায় যেয়ে সব কিছু জানানো হবে।
তবে ঘটনার তদন্তে নেমে একজন গোয়েন্দা অপরাধ ও তদন্ত শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জটিল। তকে ইন্দ্রজিতের যে অভিযোগ তা অগোছাল । তবে প্রতিকার পেতে বিষয়টি নেয়ে জয়দেব বিশ্বাসকে থানায় বা আদালতে মামলা করতে হবে।
আল/দীপ্ত সংবাদ