বুধবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
বুধবার, নভেম্বর ১৩, ২০২৪

শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন দুদিন, পেলেন ৪৫ মিনিট!

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ: সর্বশেষ সম্পাদনা:

পরিস্থিতি যে একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সেটা কিছুতেই মানতে চাচ্ছিলেন না শেখ হাসিনা। ক্ষমতা ছাড়ার শেষ সময়েও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আরও রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি।

রবিবার (৪ আগস্ট) দলীয় অস্ত্রধারী কর্মীদের নামিয়ে দিনভর সারা দেশে ব্যাপক সংঘাত ও প্রাণহানি ঘটানোর পরও ছাত্রজনতার আন্দোলন সামাল দিতে পারেননি শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পেরে রাতেই তাঁর একজন উপদেষ্টাসহ কয়েকজন নেতা সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরামর্শ দিলে শেখ হাসিনা তা মানতে চাননি; বরং সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে কারফিউ আরও কড়াকড়ি করতে বলেন।

সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীরা কারফিউ ভেঙে নামতে শুরু করে।

বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র বলছে, দেশ ছাড়ার আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) গণভবনে ডেকে চাপ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

নিরাপত্তা বাহিনী কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না, সেটার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা আইজিপিকে দেখিয়ে বলেন, তারা (পুলিশ) তো ভালো করছে। তখন আইজিপি জানান, পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গেছে, তাতে পুলিশের পক্ষেও আর বেশি সময় এ রকম কঠোর অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব নয়। বলপ্রয়োগ করে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না।

শীর্ষ কর্মকর্তারা শেখ রেহানার সঙ্গে আরেক কক্ষে আলোচনা করে তাঁকে পরিস্থিতি জানিয়ে শেখ হাসিনাকে বোঝাতে অনুরোধ করেন। শেখ রেহানা এরপর বড় বোনের সঙ্গে আলোচনা করেন। কিন্তু তিনি ক্ষমতা ধরে রাখতে অনড় থাকেন। একপর্যায়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এরপর জয় তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর শেখ হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন।

এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের নিরাপদে দেশের বাইরে পাঠাতে তিনি সেনাবাহিনীর কাছে দুদিন সময় চান। পাশাপাশি পদত্যাগের আগে জাতির উদ্দেশে প্রচারের জন্য একটা ভাষণ রেকর্ড করতে চান শেখ হাসিনা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি।

কারণ গোয়েন্দা তথ্য আসে যে বিপুলসংখ্যক ছাত্রজনতা শাহবাগ ও উত্তরা থেকে গণভবন অভিমুখে রওনা হয়েছে। দূরত্ব বিবেচনায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে শাহবাগ থেকে গণভবনে আন্দোলনকারীরা চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে গণভবন রক্ষা করতে হলে সেনাবাহিনীকে রক্তপাত করতে হতো। তাই সেই ঝুঁকি না নিয়ে শেখ হাসিনাকে ভাষণ রেকর্ডের সময় না দিয়ে নিরাপদে সরিয়ে নিতে ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

এরপরই ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে হেলিপ্যাডে আসেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাঁদের কয়েকটি লাগেজ ওঠানো হয়। তারপর তাঁরা বঙ্গভবনে যান। সেখানে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বেলা আড়াইটার দিকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই বোনকে বহনকারী সামরিক যানটির চালক ছিলেন বিমানবাহিনীর এয়ার কমডোর আব্বাস। তিনি ১০১ স্কোয়াড্রনের সদস্য।

 

এসএ/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More