বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৫

শেখ হাসিনাকে ১৪০০ বার ফাঁসি দেয়া উচিত: চিফ প্রসিকিউটর

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

চব্বিশের জুলাইআগস্টে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘অপরাধের প্রাণভোমরা’ উল্লেখ করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালএ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ আবেদন জানান তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সকল অপরাধের প্রাণভোমরা শেখ হাসিনা। সে অনুশোচনাহীন ও হৃদয়হীন অপরাধী। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। এ থেকে অনুকম্পা পাওয়ার সুযোগ নেই। ১৪০০ জনের হত্যার জন্য ১৪০০ বার ফাঁসি দেয়া উচিত ছিল। যেহেতু সেটা সম্ভব নয়, তাই সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এভাবে নিজের দেশের নাগরিককে হত্যা করতে না পারে।’

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে জুলাইআগস্টের গণঅভ্যুত্থান দমনে অপরাধের ‘গ্যাং অফ ফোর’এর একজন হিসেবে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তারও সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেন তাজুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলমামুন আইন অনুযায়ী আদালতকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাই তার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন।

এছাড়া জুলাইঅগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অপরাধীদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আবেদনও করেন চিফ প্রসিকিউটর।

শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পঞ্চম দিনে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষের শুনানির জন্য আগামী সোমবার ধার্য করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল১ এ আদেশ দেন।

ঐতিহাসিক এই মামলায় ইতোমধ্যেই সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। এ পর্যন্ত মোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন।

আজ প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম। অন্য প্রসিকিউটররাও এসময় উপস্থিত থাকেন।

পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলমামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ শুনানিতে অংশ নেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আলমামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১।

একপর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আলমামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা ট্রাইব্যুনালে চলমান। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে গুমখুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্যটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছর জুলাইআগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More