জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। বিচারটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে সম্পন্ন হয়েছে, বলেন তিনি।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পরওয়ার বলেন, এই রায় স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়েছে অভিযুক্তরা কতটা নির্মম, প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং জঘন্য অপরাধে জড়িত ছিলেন। পত্রিকা, অডিও–ভিজ্যুয়াল উপাদান এবং টেলিফোন আলাপসহ সকল প্রমাণ সরাসরি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচারকাজ পুরোপুরি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে। পরওয়ার অভিযোগ করে বলেন, এর আগে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার হয়েছিল তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করেনি। ‘সেসব মামলায় সাজানো অভিযোগ, মনগড়া সাক্ষ্য, পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক এবং পূর্বনির্ধারিত রায় ছিল,’ বলেন তিনি।
রায়ের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে পরওয়ার বলেন, এই বিচার বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বহুকাল ধরে প্রত্যাশিত ন্যায়বিচারের চাহিদা পূরণ করেছে; যা জাতীয় নির্বাচনের আগেও ছিল অগ্রাধিকারমূলক দাবি।
তিনি জানান, অন্তর্র্বর্তী সরকারের সময়ে দলের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতাকে আপিলে সুপ্রিম কোর্ট খালাস দেন, সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।
পরওয়ার বলেন, ‘আমরা যেসব নেতাকে হারিয়েছি, তাদের ফিরিয়ে আনতে না পারলেও আজকের রায় স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং পুরো জাতির জন্য একটি শিক্ষা।’
তিনি আরও জানান, ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। বিচার ব্যাহত করতে ককটেল হামলা, যানবাহন পোড়ানো ও অবরোধের মতো বিভিন্ন চেষ্টা হলেও জাতি এসব ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করেছে।
পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান পরওয়ার। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরা যেন মানবিক ও সভ্য সমাজে বসবাস করতে পারে; এমন একটি আদর্শ বাংলাদেশ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চাই।’