দরজায় কড়া নাড়ছে আরও একটি বিপিএল। ড্রাফট আর ব্যক্তিগত যোগাযোগে দল গোছানো শেষ। মাঠের লড়াইয়ের আগে ফুরফুরে মেজাজে আছে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। দেশি–বিদেশি খেলোয়াড় মিলে এবারের অন্যতম ভারসাম্যপূর্ণ ফ্রাঞ্চাইজি এটি।
আগের আসরে বরিশালের শিরোপা জয় ছিলো দুর্দান্ত এক ইতিহাস। কারণ, এর আগে কখনোই বিপিএল শিরোপা না জেতা বরিশাল, ড্রাফট থেকে ভালো দল গড়লেও, বিশ্বকাপের সময় তামিম–সাকিব দ্বন্দ্বে জাতীয় দলের অস্থিরতা, সেখান থেকে তামিমের ছিটকে পড়া আর বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মেহেদী মিরাজের, সাকিবের সাথে ঘনিষ্ঠতা মিলে যে সংকট তৈরি হয়েছিলো; তার সরাসরি প্রভাব বিপিএলে পড়ার শঙ্কা ছিলো। তবে বাস্তবে ঘটে তার বিপরীত। তামিম, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, মিরাজদের মত অভিজ্ঞ আর পরিণত ক্রিকেটাররা এক হয়ে মাঠে নামেন। ফলাফল, বিশ্বকাপ খেলতে না পারার অপমান ছাপিয়ে, তিন মাসের মধ্যে ট্রফি উঁচিয়ে বীরের বেশে তামিম ইকবালে প্রত্যাবর্তন।
অবশ্য এ বছরের বিপিএল হচ্ছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। দেশের বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, খেলা হচ্ছে না একাধিক তারকা ক্রিকেটারের। সাথে পরিবর্তন এসেছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলোতেও। তবে বরিশাল আছে অনেকটা আগের মতই। তামিম–মুশফিককে ধরে রাখার পাশাপাশি, ড্রাফট থেকে মাহমুদুল্লাহ আর তাইজুলকেও কিনেছে তারা।
তবে অলরাউন্ডার মেহেদী মিরাজকে আর দলে রাখেনি ফরচুনাররা। আগের আসরে সিলেটের হয়ে খেলা জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে দলে ভেড়ানোর আগেই, সরাসরি তারা সাইন করায় তাওহীদ হৃদয়কে।
হৃদয়কে নেয়ার পর বরিশালের পরিকল্পনা নিয়ে যে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিলো, ড্রাফটেও দেখা যায় তারই প্রতিফলন। পেস বোলিং অলরাউন্ডারের প্রতি ঝোঁক কমিয়ে স্পিন অলরাউন্ডার বাড়াতেই এবার সৌম্য, সাইফুদ্দিনদের প্রতি আগ্রহ না দেখিয়ে, তারা দলে নেয়া রিশাদ, নাঈম হাসান, আরিফুলদের। আর পেসার হিসেবে দেশিদের মধ্যে আছেন এবাদত, শহিদুলরা।
এ তো গেলো; দেশিদের নিয়ে ফরচুন বরিশালের পরিকল্পনা। বিদেশি ক্রিকেটারদের বেশিরভাগকেই সরাসরি ড্রাফটের বাইরে থেকে এনে সাইন করিয়েছে তারা। আগের আসরের তুরুপের তাস ডেভিড মিলারকে না পেলেও, ডেভিড মালান, কাইল মেয়ার্স কিংবা পাথুম নিশাঙ্কার মত হার্ড হিটারদের উপস্থিতিই বরিশালের ফ্রাঞ্চাইজিকে দিচ্ছে বাড়তি আত্মবিশ্বাস। সাথে মোহাম্মদ নবী, জেমস ফুলার, ফাহিম আশরাফদের মত অলরাউন্ডার তো দলের শক্তি বাড়াবেনই।
সব মিলে সাত ফ্রাঞ্চাইজির বিপিএল, এবারও জমজমাট আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হবে। তবে বাকি সব দলকে বরিশালের দিকে বাড়তি নজর রাখতেই হচ্ছে। উদ্বোধনী দিন ৩০ ডিসেম্বর নতুন ফ্রাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু করবে তামিম বাহিনী।
তওসিয়া ইসলাম/ এজে /দীপ্ত সংবাদ