শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে অনন্য নজির রেল জিএমের

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারভারতীয় ওয়েব সিরিজ ‘দ্য রেলওয়ে মেন’ ছবির মতো ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশেও। যেখানে গল্পের নায়ক অসীম কুমার তালুকদারযার অক্লান্ত চেষ্টা আর দূরদর্শিতায় ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পান ট্রেনটিতে থাকা শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। এদিন সি ইউনিটের চতুর্থ শিফটের পরীক্ষা ছিল দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এতে অংশ নিতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন শতাধিক ভর্তিচ্ছু। সকাল সোয়া ৬টায় যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও ট্রেন ছাড়ে তিন ঘণ্টা দেরিতে

এদিকে পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন কৌশলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে রাজশাহী পৌছানোর ব্যবস্থা করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার। পুরো ঘটনার বিষয়ে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বিস্তারিত বর্ণনা দেন

আজকের ধূমকেতুর যাত্রা’শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকা থেকে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী ধূমকেতু এক্সপ্রেস নামের ট্রেনে রওনা হন। ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছাড়তেই দেরি হয়ে যায়। বেলা ১১টায় হিসাব করে দেখা যায়, ট্রেনটি বেলা ৩টা নাগাদ রাজশাহীতে পৌঁছাবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রেনটি অন্য ট্রেনকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন এনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস আবার চালু করা হয়।

তখন হিসাব করে দেখা যায়, ট্রেনটি বিকেল ৪টায় রাজশাহীতে পৌঁছাবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে অসীম কুমার তালুকদার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান।

ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছিল। তবে দুশ্চিন্তা ছাড়ছিল না। সময়মতো পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছিল। উপায় না পেয়ে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাস করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বেলা ৩টা ৩৮ মিনিটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেনটি থামে। পরে শিক্ষার্থীরা দ্রুত দৌড়ে পরীক্ষার হলে গিয়ে বসেন।’

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার বলেন, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। ট্রেনটি শুরুতেই ছাড়তে লেট করে। মাঝে ইঞ্জিন নষ্ট হয়েছিল। পরে অন্য একটি ট্রেনের ইঞ্জিন লাগিয়ে পুনরায় ট্রেন চালানো হয়।নির্দিষ্ট গতির বেশি স্পিডে ট্রেন চালিয়ে ছুটে এসেছি। এছাড়া অনেক ক্রসিং এ আমরা ট্রেন থামাইনি। গতবছর আমার ছেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। আমি বুঝতে পারি এমন সময় বাবা মায়ের কেমন উদ্বেগ থাকে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, দুর্ভোগ কাউকে বলে আসে না। ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ায় ঠিক সময়ে ট্রেনটি আসতে পারেনি। ট্রেনে ১২৫ জনের মতো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট পর পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে মানবিক বিবেচনায় তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।’

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More