আমরা অনেকেই ভাবি রোযা রেখে কখন করবো শরীরচর্চা। সকালে নাকি বিকেলে? তবে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোযা রেখে সকালে শরীরচর্চা করাই স্বাস্থ্যসম্মত। এক্ষেত্রে, সেহরি শেষে খানিক বিশ্রাম নিয়েই করা যেতে পারে শরীরচর্চা।
রোজায় কিছু শরীরচর্চা:
সুস্থ দেহ ও প্রফুল্ল মনের জন্য শরীর চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার জন্য শরীরচর্চা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে শরীরচর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে রোজা রেখে শরীরচর্চা করতে গেলে কিছু বিষয়ের ওপর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে–
- ইফতারি করার কমপক্ষে ১ ঘন্টা বা তার থেকে বেশি সময় পর ব্যায়াম করুন এবং অনেকে ইফতারির পর পর জিমে ব্যায়াম করতে আগ্রহী। ইফতারির কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর ব্যায়াম করা যাবে। তবে সামান্য ইফতারি করে তারপর কিছু সময় পর ব্যায়াম করুন।
- এছাড়া বেশি ইফতারি না করেও ব্যায়াম করতে জিমে আসতে পারেন। আপনাকে অবশ্যই ইফতারির কিছু সময় রেস্ট নিয়ে ব্যায়াম করা বেশি ভালো কারণ সারাদিন রোজা রাখার পর আপনার শরীর ক্লান্ত, এছাড়া আপনি ইফতার করার পর পর কখনও জিমে এসে ব্যায়াম করতে মনে চাইবে না।
- না খেয়ে হাঁটতে থাকলে শরীরের চর্বি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে যা প্রকারান্তরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই সময়ে সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। শরীরচর্চার ফলে মস্তিষ্ক, স্নায়ু কোষ এবং পেশী কোষগুলো সতেজ থাকে। এটি ছেড়ে দেওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত হবে না।
- রোজার সময় তারাবির নামাজের পরে শরীরচর্চা সবচেয়ে উত্তম। এ ছাড়া ইফতারের পরে ও শরীরচর্চা করা যেতে পারে। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিংবা ইনসুলিন গ্রহণ করছেন তাদের ক্ষেত্রে ইফতারের পূর্বে শরীরচর্চা না করাই উত্তম। সময়, সুযোগ ও পরিবেশ থাকলে সেহরির পূর্বেও শরীরচর্চা করা যেতে পারে।
- ধীর গতিতে হাঁটা, ওজন উত্তোলন করা, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং এর মতো মৃদু মাত্রার ব্যায়াম করতে কোনো বাধা নেই। যে সমস্ত শরীর চর্চায় হৃদস্পন্দনের গতি মিনিটে ১৫০ এর বেশি হয় সে ধরনের শরীরচর্চা রোজা রেখে করা অনুচিত। রিচ আপ, পুশ আপ, ওজন উত্তোলন, জায়গায় দাঁড়িয়ে উঠ–বস করা এ সমস্ত ব্যায়ামের পর্যায়ে পড়ে।
- তারাবিহ ২০ রাকাত নামাজ রমজানের সময় শারীরিক পরিশ্রম সুনিশ্চিত করে। এছাড়া হালকা ব্যায়াম গুলো চালিয়ে যেতে পারেন।
রোজায় লক্ষনীয় বিষয়:
অনেকেই আছেন গভীর রাতে উঠতে পারেন না। কিন্তু রোজা রাখার কারণে সাহরিতে উঠতে হয়। এজন্য ঘুমের কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। রোজার সময় একটু আগে ঘুমিয়ে পড়ুন। কখনোই সারারাত জেগে সাহরি খেয়ে ঘুমাতে যাবেন না। এতে শারীরিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ঘুম কম হলে হিটস্ট্রেস দেখা দিতে পারে এবং সারা দিন রোজা রাখতে কষ্ট হয়। তাই দিনের বেলায় কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে বা ঘুমিয়ে পুষিয়ে দেওয়া যায়। তাই বলে সারা দিন ঘুম নয়। যারা কর্মজীবী তারা কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে পারেন।
অনু/দীপ্ত সংবাদ