রমজান মাস আত্মশুদ্ধি, সংযম ও ধৈর্যের মাস। রোজা শুধু না খেয়ে থাকা নয়; বরং এটি আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চা ও নৈতিক উন্নয়নের একটি মাধ্যম। তাই রোজা রাখার পাশাপাশি কিছু কাজ অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত, যা রোজার মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করতে পারে।
মিথ্যা বলা ও গীবত করা
মিথ্যা বলা ও পরনিন্দা ইসলাম ধর্মে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও প্রতারণা করা থেকে বিরত থাকে না, তার না খেয়ে থাকার কোনো মূল্য নেই।” তাই রোজা রেখে কারও সম্পর্কে মিথ্যা বলা, গীবত বা অপবাদ দেওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরি।
অশ্লীলতা ও কটূক্তি
অশ্লীল কথা বলা, কটূক্তি করা বা কারও প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করা রোজার সংযমী চেতনার পরিপন্থী। নবী করিম (সা.) বলেছেন, “তোমাদের কেউ রোজা রেখে যদি কারও সঙ্গে ঝগড়া করে, তবে সে যেন বলে—আমি রোজাদার।“
অপ্রয়োজনে সময় অপচয় করা
রমজান মাস ইবাদত–বন্দেগির জন্য বিশেষভাবে বরকতময়। অথচ অনেকেই এই সময়ে অপ্রয়োজনীয় কাজে মগ্ন থাকেন, যেমন—অতিরিক্ত ঘুমানো, অবান্তর আলোচনা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অযথা সময় ব্যয় করা ইত্যাদি।
অসৎ উপায়ে উপার্জন ও প্রতারণা
রোজা রেখে কেউ যদি অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে বা প্রতারণা করে, তাহলে তার রোজার প্রকৃত ফজিলত নষ্ট হয়ে যায়। সৎ ও বৈধ উপায়ে উপার্জন করাই প্রকৃত রোজাদারের বৈশিষ্ট্য।
রাগ ও ধৈর্যহীনতা
রমজান সংযমের মাস, তাই এই মাসে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অল্প কিছুতেই রেগে যাওয়া, অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা বা অন্যকে কষ্ট দেওয়া রোজার মাহাত্ম্য নষ্ট করতে পারে।
অপচয় ও অতিভোজন
সারাদিন রোজা রাখার পর অনেকে ইফতারে মাত্রাতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করেন, যা স্বাস্থ্য ও ইসলামের শিক্ষা—উভয়েরই বিরুদ্ধে যায়। সংযমের চর্চা করাই রোজার অন্যতম উদ্দেশ্য, তাই খাবারের অপচয় এবং অতিভোজন থেকে বিরত থাকা উচিত।
রমজান শুধু না খেয়ে থাকার মাস নয়; এটি আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। তাই রোজা রাখার পাশাপাশি এসব অনৈতিক ও অনুচিত কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। সংযমী আচরণ ও সৎ জীবনযাপনের মাধ্যমেই রোজার প্রকৃত তাৎপর্য অর্জিত হবে।
ইএ/এসএ