দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পেঁপে চাষ করে নিয়মিত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চাষী আলতাফ হোসেন।
নিজের তেমন জায়গা জমিন না থাকলেও কাচা রাস্তার দুই ধারে নিজ উদ্যোগে সারি–সারি পেঁপে গাছ লাগিয়ে তাতেই স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। এতে বানিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করছেন এ চাষী।
কৃষক আলতাফ হোসেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের গ্রামের গুলজার রহমানের ছেলে। বাবা ছেলে দুজনেই কৃষক। তারা সকল ধরনের ফসল আবাদ করেন।
খানসামা উপজেলার জমিদার নগর থেকে বরলাম বাজার যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তায় হওয়ায় থাইল্যান্ড গ্রীন ল্যাডি জাতের ৪শ পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন এই কৃষক। প্রতিটি পেঁপে গাছে থোকায় থোকায় ঝুঁলছে পেঁপে। তাতেই মুখে হাসি ফুটেছে তার। এখন চাষী আলতাফের ধ্যান জ্ঞান এই রাস্তার দুই ধারে লাগানো পেঁপে গাছকে ঘিরেই। রাস্তার দুই ধারে পেঁপে বাগান দেখে অনেক পথচারী মুগ্ধ হয়ে তাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি বাজারজাত করতে শুরু করেছেন পেঁপে।
জানা গেছে,রাস্তার ধারে থাকা জঙ্গল পরিষ্কার করে পরিত্যক্ত জায়গায় সারিবদ্ধ পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন তিনি। গাছে ঝুঁলে থাকা সবুজ পেঁপে দেখেই প্রাণ জুড়ে যায় পথচারীদের। প্রতিটি পেঁপে গাছ থেকে প্রথম ধাপে প্রতি গাছ থেকে ৫ থেকে ৭ কেজি করে পেঁপে সংগ্রহ করেন। গড়ে ১০ মণের বেশি পেঁপে উত্তোলন করেন। বাজারে প্রতিমণ পেঁপে তিনি ৭০০থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, আমি ছোট থেকেই বাবার সাথে বিভিন্ন ধরনের চাষ করি। আমি সব সময়ই কৃষি অফিসারের পরামর্শে চাষ আবাদ করি। এবারও নতুন করে পেঁপে চাষ করার কথা বলেন আমাদের কৃষি অফিসার ইয়াসমিন আক্তার। আমি রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত জায়গা জঙ্গল হওয়ায় আমি পরিষ্কার করে পরীক্ষা করার জন্য রাস্তার ধারে ৪০০শ পেঁপে গাছ লাগাই। আল্লাহ রহমতে গাছে পেঁপে ধরেছে। আমি এখন পর্যন্ত ১০ মণের বেশি পেঁপে বিক্রি করেছি এবং ভালো মানের দামও পেয়েছি। আমি আগামীতে আমার চাষ আবাদ জমি ও রাস্তা দুই ধারে বেশি করে পেঁপে চাষ করবো।
আবুল কালাম নামে এক পথচারী বলেন, আমি এই পথ দিয়ে হাট বাজারে যাওয়া আশা করি । কিন্তু রাস্তাটি পাকা না হওয়াতে রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় জঙ্গল হয়। আলতাফ সাহেব সেই জঙ্গল পরিষ্কার করে এবার পেঁপে চাষ করেন। তিনি নিজে অনেক পরিশ্রমি কৃষক। তিনি সবসময় তার চাষ আবাদ জমিতে সময় দিয়ে থাকে। এবার রাস্তার পাশে সুন্দর পেঁপে গাছ লাগিয়ে রাস্তাটি ফুটিয়ে তুলেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আলতাফ হোসেন এ বছর সাড়ে তিনমাসে গ্রীন ল্যাডি পেঁপে চারা লাগিয়েছিলেন আমাদের কৃষি বিভাগের পরামর্শে। বর্ষার মৌসুমে অন্যান্য সবজি কম থাকায় পেঁপের চাহিদা বাড়ে। তিনি বিষয়টি মাথায় রেখে এ পেঁপে চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে বাজারে ভালো মূল্যে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা আশা রাখি তিনি পেঁপে চাষ করে ভালো লাভবান হবেন।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ